একুশের ভোটে ভরাডুবির পরই দলের রাজ্য সভাপতির পদ গিয়েছিল তাঁর। বাংলা থেকে সরিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির। এবার রাজ্য রাজনীতি থেকে আরও দূরত্ব সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। বাংলার বদলে অন্য আট রাজ্যের সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলাতে হবে তাঁকে। যদিও দলের ফতোয়া কার্যত উড়িয়ে তিনি বাংলাতেই থাকছেন বলে সাফ জানিয়ে দিলেন দিলীপ। শুধু তাই নয়, রাজ্যে বসেই তিনি কৌশলী ভূমিকা নেবেন বলে দলের ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিলীপ বাংলায় থাকার কথা জানিয়ে বলেন, ‘কোথাও যাচ্ছি না, বাংলাতেই থাকছি। প্রথমে এক-দু’বার যাব। কাজ শুরু করে দিয়ে আসব। এখানে বসে থেকেই যা করার করব। সবই তো ভারচুয়ালি হবে। যা রিপোর্ট নেওয়ার অ্যাপের মাধ্যমেই পেয়ে যাব।’ স্বাভাবিক ভাবেই এর ফলে স্পষ্ট দিলীপের সঙ্গে দলের মতানৈক্য।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি এখন ‘অভিভাবকহীন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু এখন তাঁকেই অন্য রাজ্যের অভিভাবক করে পাঠিয়ে দেওয়ার পিছনে রাজ্যের কতিপয় নব্য ও তৎকাল বিজেপি নেতাদের চক্রান্তই দেখছে দিলীপ শিবির। তাঁকে অন্য রাজ্যে পাঠানোয় বাংলায় বিজেপির অনেকেই কি খুশি হয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নাম না করে সুকান্ত-শুভেন্দুদের কটাক্ষ করে দিলীপের সপাট জবাব, ‘সরি, তাঁদেরকে খুশি করতে পারছি না।’ যদিও দিলীপকে বাংলা থেকে সরানোয় খুশি গোপন করেননি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। নতুন দায়িত্বের জন্য দিলীপকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি টুইট করেছেন।
এদিকে, ভিন রাজ্যে তাঁর দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে দলীয় নির্দেশকে অমান্য করার জন্য দিলীপ ঘোষকে পরামর্শ দিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘সত্যি সত্যি দুঃখ হয় দিলীপদার জন্য। দলের কাছে দিলীপদা সবসময় বঞ্চিত। দিলীপদার প্রতি অবিচার হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত মত, দিলীপদার প্রতি সঠিক মূল্যায়ন হল না।’ আবার রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘দিলীপবাবু ভেবে দেখুন। যার হয়ে তিনি এত গলা ফাটান সেই দল তাঁকে সম্মান দিচ্ছে, নাকি অসম্মান করছে। আমি দিলীপবাবুকে বলব, যেভাবে বাংলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, দলের এই নির্দেশ আপনি অমান্য করুন। বাংলা ছেড়ে যাবেন না।’ তাঁর প্রতি তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতার এমন মন্তব্য নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘তাঁরা আমার জন্য চিন্তিত তা জেনে খুব আনন্দ হচ্ছে। চিন্তা করবেন না। আমি বেশিরভাগ সময় বাংলাতেই থাকব।’