এই মুহূর্তে গোটা দেশজুড়েই মন্দির-মসজিদ নিয়ে বিতর্ক চলছে। আর এই মুহূর্তে সেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে জ্ঞানবাপী মসজিদ। ইতিমধ্যেই মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহেই একেবারে উল্টো ছবি দেখা গেল মমতার বাংলায়। হ্যাঁ, বারাসতের পশ্চিম ইছাপুর নবপল্লির বসু পরিবারের মসজিদে এখন যা ঘটছে, তা গোটা ভারতের নিরিখেই যেন উলটপুরাণ। রাজস্থান থেকে আসা কারিগরেরা পর্যন্ত ভাবতে পারেননি মসজিদের মিনার গড়তে যে মানুষটি তাঁদের ডেকে এনেছেন তাঁর নাম পার্থসারথি বসু।
কাশী বা মথুরায় যখন শতাব্দীর পর শতাব্দী বিরাজমান মসজিদের অস্তিত্ব নিয়ে লাগাতার জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে, এখানে একটি হিন্দু পরিবারের ধ্যানজ্ঞান— তাঁদের প্রাণের মসজিদের সংস্কার, পরিচর্যা। অতিমারির দু’টো বছর জীবন থমকে থাকার পরে এখনই পুরোদমে মিনার বসিয়ে নতুন করে চলছে মসজিদের সাজসজ্জা। মিনার রং করা শেষ হবে কয়েক মাসেই। এরপর মসজিদ লাগোয়া পির বাবা আমানত আলি শাহের হুজুরঘর ঘিরে কাচের দেওয়াল গড়ে ভক্তদের বসার পরিসর তৈরির কাজটাও দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা বসুবাড়ির ছেলে পার্থ ওরফে বাপ্পার।
মন্দির-মসজিদের রাজনীতি দু’চক্ষের বিষ পার্থ বা তাঁর বাবা দীপকবাবুর। এই বসু-বাড়ির বৌ-রা বিয়ের পরে মসজিদ চত্বরে প্রণাম করে শ্বশুরবাড়ি ঢোকেন। নবজাতককে অন্নপ্রাশনে পায়েস খাওয়ান ইমাম সাহেব। এবং কারও মৃত্যুর পরেও শ্মশানযাত্রার আগে ইমাম আজান দেন। পার্থ বলেন, ‘ধর্ম নয়, মানবতার টানেই এই মসজিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছি! আমাদের দেশের সংস্কৃতিই এ শিক্ষা দিয়েছে। দেশে যা চলছে, তাতে এই মসজিদের সেবাই এখন দেশের কাজ বলে মনে হয়!’