ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা? উঠছে তেমনই প্রশ্ন। গম নিয়ে এমনিতেই টালমাটাল সারা দেশে। মোদী সরকারের সংস্থা এফসিআইয়ের থেকে গম পাওয়ার এখনও কোনও নিশ্চয়তা নেই। আগামী জুন মাস থেকেই বন্ধ হচ্ছে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি রেশন গ্রাহকের গম দেওয়া। সূত্রের খবর, রাজ্যে গ্রাহকদের গমের বদলে চাল দেওয়া হবে। সেই কারণেই রাজ্যকে অতিরিক্ত চালের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, এই কারণে প্রতি মাসে রাজ্যের প্রায় অতিরিক্ত ৯০ হাজার টন অতিরিক্ত চাল প্রয়োজন হবে। আগামী ৭ মাস ধরেই এই ব্যবস্থা চলতে থাকবে, বলেই মনে করছে রাজ্য। ফলত রাজ্যকে ৬ লক্ষ টনের বেশি চাল কিনতে হবে। খাদ্যদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খোলা বাজার থেকে চাল কেনার জন্য টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া চলছে। খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায়, প্রায় আড়াই কোটি গ্রাহক মাথাপিছু প্রতি মাসে ২ কেজি চাল ও ৩ কেজি গম পেতেন। দুই নম্বর প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৯০ লক্ষ গ্রাহক মাথাপিছু এক কেজি করে চাল ও গম পেতেন। এক্ষেত্রে আগামী কয়েকমাস দুই শ্রেণির গ্রাহকেরা যথাক্রমে শুধু মাথাপিছু ৫ ও ২ কেজি করে চাল পাবেন।
উল্লেখ্য, এতদিন খাদ্যদফতর গ্রাহকদের জন্য প্রয়োজনীয় গম এফসিআই-র কাছ থেকে ওপেন সেল স্কিমের মাধ্যমে ক্রয় করত। ভিন রাজ্য থেকে পরিবহণ খরচসহ প্রতি কেজি গমের দাম পড়ত ২৫ টাকা। সরকারি নির্ধারিত দামে অর্থাৎ এখন কুইন্টাল প্রতি ১৯৪০ টাকা কেনা ধান ভানিয়ে উৎপাদিত চালের প্রতি কেজিতে দাম পড়ে প্রায় ৩৩ টাকা। খাদ্যদপ্তর সূত্রে খবর, খোলাবাজার থেকে কম দামে চাল কেনা যাবে বলে আশা করছে রাজ্য। এফসিআইয়ের কাছ থেকে গম না পাওয়ায় রাজ্য প্রকল্পের গ্রাহকদের জন্য খাদ্য খাতে সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই জাতীয় ও গরিব কল্যাণ প্রকল্পের আওতায় থাকা রেশন গ্রাহকদের বরাদ্দ গমের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। তার বদলে চাল দেওয়ার কথা জানা যাচ্ছে, এ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গ্রাহকদের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত চাল এফসিআইকে সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। রাজ্যের সাফ কথা, এই অতিরিক্ত চাল সরবরাহ করার দায়িত্ব নেবে না রাজ্য। রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর কথায়, গম সরবরাহ বন্ধ করলে, বা কমিয়ে দেওয়ার কারণে গ্রাহকদের অসুবিধা হবে। কারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলে গিয়েছে। এতদিন ময়দা কলগুলি ওপেন সেল স্কিমের মাধ্যমে এফসিআইয়ের কাছ থেকে গম কিনত। কিন্তু এটা বন্ধ হয়ে যাওয়াই খোলাবাজারে আটার দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই যায়। যার জেরে ফের ভুগতে হতে পারে জনগণকে। সেজন্যই বিকল্প হিসেবে রেশনে চাল দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
