অদূর ভবিষ্যতে এক ভয়াবহ দিন দেখতে চলেছে দেশ। হাতে আর মাত্র ৭ বছর। তারপরেই অর্থাৎ ২০৩০ সালে পেটের ভাত জুটবে না অন্তত ৯ কোটি ভারতীয়র! ২৩ শতাংশের বেশি ভারতীয়কে পড়তে হবে অনাহারের মুখে! হ্যাঁ, এমনই এক তীব্র খাদ্যসঙ্কটের মুখোমুখি হতে চলেছে দেশ। এই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরাই।
আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা কেন্দ্রের বৈশ্বিক খাদ্যনীতি রিপোর্ট ২০২২-এর গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই ভয়ংকর তথ্য। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে চোখের সামনে প্রকট হচ্ছে বিপর্যয়ের সংকেত। বহুদিন ধরেই পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তনের রোষের মুখে। চলছে বহু গবেষণাও। তেমনই এক গবেষণা-সূত্রে সম্প্রতি জানা গিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কৃষি ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে চলেছে!
আইপিসিসি রিপোর্টে সতর্ক করে বলা হয়েছে, জলবায়ু বদলের জেরে ভারতে চাল উৎপাদন ১০ থেকে ৩০ শতাংশ কমতে পারে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে ভারত আর পাকিস্তানই। কৃষিপ্রধান দেশ ভারত। কখনও অতিবৃষ্টি তো কখনও অনাবৃষ্টি। তার সঙ্গে প্রবল গরম। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক পরিবেশ আর থাকছে না। যার জেরে ফলনে প্রভাব পড়ছে।
আইপিসিসি-র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চরম জলবায়ু পরিস্থিতিতে সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য-নিরাপত্তা। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের ওই সংস্থার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়বে বন্যা ও খরা। যার জেরে সবচেয়ে জেরবার হবে ভারত, পাকিস্তান-সহ সন্নিহিত এলাকা।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ২০২২ : প্রভাব, অভিযোজন এবং সঙ্কট’- শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এশিয়ার কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থায় জলবায়ু সম্পর্কিত এই সংকট নিয়ে বলা হয়েছে। এর জেরে ভারত-পাকিস্তানের মতো কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে থাকা দেশগুলিতে সমস্যা বেশি দেখা দেবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কার্বন নির্গমন যদি ক্রমশ বাড়তে থাকে বড় সমস্যায় পড়বে ভারতের ১১টি রাজ্য। তার মধ্যে রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাব।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব পড়বে মৎস্য, জলজ উদ্ভিদ ও ফসল উৎপাদনের উপরে। ভুট্টা উৎপাদন ২৫-৭০ শতাংশ কমতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবকে যদি ধরা হয়, সেক্ষেত্রে ৯.০৬ কোটি ভারতবাসী (২২.৬৯ শতাংশ বেশি) অনাহারের ঝুঁকিতে পড়বে।