বঙ্গ বিজেপির যেন শনির দশা চলছে! একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই দলের অন্দরে চলছে মুষল পর্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, লোকাল ট্রেন থেকে কলকাতার রাজপথে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার যেমন আলিপুরদুয়ারে দলীয় নেতাকে অপছন্দ হওয়ায় রাতভর ধর্না দিলেন বিজেপি কর্মীরা। যা নিয়ে আলিপুরদুয়ার বিজেপির জেলা দফতরে তুমুল উত্তেজনা। সূত্রের খবর, মোর্চা জেলা সভাপতি কমলেশ রায় ও বিজেপির জেলা সম্পাদক রতন তরফদারকে আটকে রেখে বুধবার রাত থেকে নেতা কর্মীরা বিক্ষোভ অবস্থানে সামিল হয়েছেন।
এ ঘটনায় আলিপুরদুয়ারে বিজেপির কোন্দল আরও প্রকট হতে দেখা গেল। জানা গিয়েছে, দলীয় দফতরের করিডরে দুই নেতাকে আটকে রেখে ১২ নম্বর মণ্ডলের সভাপতির অপসারণের দাবি তুলেছেন বিজেপির একাংশ কর্মীরা। কয়েক মাস আগে জেলা ও মণ্ডল কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা হয়। তারপর থেকেই শুরু হয় বিরোধ। ১২ নম্বর মণ্ডল সভাপতি অনিমেষ মণ্ডলকে অপসারণের দাবি তোলেন নিচু তলার কর্মীরা। সেই অপসারণ নিয়েই গতকাল রাত্রিবেলা থেকে ধুন্ধুমার হয়ে ওঠে বিজেপি জেলা দফতর। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, জেলা সভাপতি-সহ সব নেতাকে জানিয়েছি। কিছু হচ্ছে না। যতক্ষণ না অনিমেষকে অপসারণ করা হবে ততক্ষণ তাঁদের এই আন্দোলন চলবে।
বস্তুত, কয়েকদিন আগে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে হাতাহাতি হয় আলিপুরদুয়ারেই। আর সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তা গড়ায় থানা পর্যন্ত। বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে গত রবিবার ময়দানে নেমে বৈঠক করতে হয় বিধানসভার পরিষদীয় দলনেতা তথা মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে। এরই মধ্যে আবারও প্রকাশ্যে চলে এল জেলার গোষ্ঠীকোন্দল। এই প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী এক কর্মী বলেন, ‘মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন করেছেন জেলা সভাপতি ভূষণ মোদক। সেই মণ্ডল সভাপতি অযোগ্য। আমাদের পছন্দ নয়। সেই কারণে আমরা দাবি জানিয়েছিলাম যাতে তাঁকে অপসারণ করা হয়। এরপর জেলা সহ সভাপতি সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দেয় আমরা কর্মীরা নাকি তৃণমূল থেকে এসেছি। বিধানসভা নির্বাচনের সময় নাকি তৃণমূলে গিয়েছিলাম। একজন জেলা সহসভাপতি কর্মীদের কেমন করে এই কথা বলতে পারেন? এই কারণে আমরা তাঁর অপসারণ চাইছি।’