মঙ্গলবার তিন দিনের জেলা সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রদ্যোত স্মৃতি ভবনে প্রথম বৈঠকটি সারেন তিনি। আজ জেলা সফরের দ্বিতীয় দিনে জোড়া কর্মসূচি। প্রথমে মেদিনীপুরে। তারপর বিকেলে ঝাড়গ্রামে সারেন প্রশাসনিক সভা। প্রথমে বেলা সাড়ে বারোটায় মেদিনীপুর শহরে কলেজ ময়দানে করেন রাজনৈতিক কর্মীসভা। আর সেই সভা সেরেই মমতা রওনা দেন ঝাড়গ্রামের উদ্দেশ্যে।
এবং ঝাড়গ্রামের সেই প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের তুমুল ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের টেন্ডার নিয়ে অভিযোগ পাওয়ামাত্র কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আর কত খাবে? তৃণমূল এত দিতে পারবে না।” বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই অভিযোগ জানান জেলা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু। তাঁর অভিযোগের তীর ছিল দুই কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে-পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো এবং জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দুই কর্মাধ্যক্ষই। তাঁদের দাবি, “সমস্ত কাজ হয় ই-টেন্ডারের মাধ্যমে। এখানে আমাদের কোনও ভূমিকা থাকে না।” ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষাও জানান, “সমস্ত প্রক্রিয়া মেটানো হয় ই টেন্ডারের মাধ্যমে। টেকনিক্যাল দিক দেখে বাতিল করা হয় টেন্ডার।” মুখ্যমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বলার পর অভিযোগকারীদের ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “একটা ছোট বিষয়কে নিয়ে এত বড় করে দেখানো ঠিক নয়।”
জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের টেন্ডারে কারসাজি করেন ওই দুই সদস্য। তাঁদের মনমতো ব্যক্তি টেন্ডার না পেলে অন্তত ৭-৮ বার বরাত বাতিল করেন। অভিযোগ শুনেই ফুঁসে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখবেন জেলাশাসক। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আর কত খাবেন? এবার কি হিরের চচ্চড়ি নাকি সোনার ডালনা খাবেন? এত দিতে পারবে না তৃণমূল। অনেক পেয়েছেন।” তাঁর কড়া বার্তা, “উজ্জ্বলের নামে আগেও অভিযোগ শুনেছি।
এবার শেষবার সতর্ক করছি। না হলে গ্রেপ্তার করিয়ে দেব। আর শুভ্রা মহিলা হয়েও এত লোভ কীসের?” পরে অভিযুক্ত দুই কর্মাধ্যক্ষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, “এর পর নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে মেয়েটাকে ভয় দেখাবে না।” জেলা পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে মমতার সাফ বার্তা, “আমি-আমি নয় আমরা। আমিত্ব ছাড়ো।”