কিছুদিন আগেই শোনা গেছিল গুজরাটের গির অরণ্যে কার্যত মৃত্যুমিছিল লেগেছে এশিয়াটিক সিংহদের। আর এবার তথ্য অধিকার আইনের প্রেক্ষিতে করা এক প্রশ্নের উত্তরে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোট ৩৮৪ টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে চোরাশিকারিদের লালসায়। এর ফলে আবারও বে-আব্রু হয়ে গেল বন্যপ্রাণীদের প্রতি কেন্দ্রের চূড়ান্ত গাফিলতির চিত্র।
বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (ডব্লিউসিসিবি) জানিয়েছে, বাঘ মারার ঘটনায় প্রায় ৯৬১ চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁদের কী সাজা হয়েছে সে সম্পর্কে কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। নয়ডার পরিবেশকর্মী ও আইনজীবী রঞ্জন টোমার গত ১২ নভেম্বর তথ্যের অধিকার আইনে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিলেন। সেই প্রশ্নের জবাব পাওয়ার পর চোরাশিকারিদের হাত থেকে বাঘেদের রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে টোমার কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চিঠি লিখেছেন। যদিও তাঁর কাছ থেকে এখনও কোনও উত্তরই পাওয়া যায়নি!
রঞ্জন টোমার বলেছেন, ‘আরটিআই তথ্যে পরিষ্কার, চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম নয় কেন্দ্র। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনে বর্তমান আইনের সংশোধন করা জরুরি।’ তাঁর কথায়, ‘দেশে বন্যপ্রাণীদের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। লোকালয়ে অনেক সময় হামলা চালাচ্ছে বাঘেরা। এর সুযোগ নিচ্ছে চোরাশিকারিরা।’ সম্প্রতি, মহারাষ্ট্রের বাঘ হত্যা নিয়ে শোরগোল পড়েছিল। মানুষ খেকো ‘অবনী’ নামে একটি বাঘিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
গির অরণ্যে অজানা ভাইরাসের আক্রমণে এবং রেলে কাটা পড়ে কিছুদিন আগেই মারা গেছিল বেশ কয়েকটি সিংহ। সেখানেও কেন্দ্রের উদাসীন মনোভাব প্রকাশিত হয়েছিল। আর এখানে তো চোরাশিকারিদের শাস্তির সম্পর্কে কোনও যথাযথ তথ্যই নেই। দু’জায়গাতেই গাফিলতি চরমে। এই সমস্ত ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল কেন্দ্রের হাতে কার্যত অসহায় বন্যপ্রাণীরা।