কিছুদিন আগেই সম্পন্ন হল দেশের অন্যতম হাই প্রোফাইল বিয়েটি অর্থাৎ মুকেশ অম্বানি এবং নীতা অম্বানির মেয়ের বিয়ে। আর সেই বিয়ে নিয়েই দেশ জুড়ে রীতিমত হইচই পড়ে গেছে। যে দেশে এখনও অনেক মানুষ অনাহারে দিন কাটান, শীতের কম্বল জোটে না, বহু শিশু এখনও স্কুল যেতে পারে না সেই দেশে থেকে নিজের মেয়ের বিয়েতে তাঁরা খরচ করলেন ৭০০ কোটি টাকা! এই বহুমূল্য বিয়ের খরচের জন্যে এবার মুকেশ অম্বানিকে পড়তে হল জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপালের কোপে।
নাম না করে জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক বলেছেন, ‘সমাজের প্রতি বিন্দুমাত্র দায়বদ্ধতা না দেখিয়ে যারা মেয়ের বিয়েতে ৭০০ কোটি টাকা খরচা করে তাঁরা আসলে পচা আলুর মতই মূল্যহীন’। তাঁর অভিযোগ এই সব বড়লোকেরা সমাজের উন্নতির জন্য একপয়সাও দান করেন না৷ অথচ মেয়ের বিয়ের জন্য ৭০০ কোটি টাকা অনায়াসে ব্যয় করেন৷ এঁরা দেশে পচা আলুর মত৷ কোনও কাজে লাগেন না, মূল্যহীন৷
অনেকেই বলেছেন সত্যপাল ভুল কিছু বলেননি। যেখানে বিল গেটস-এর মত ব্যক্তি নিজের আয়ের প্রায় ৯৯%-ই দান করে দেন সমাজের উন্নয়নে সেখানে এত টাকা বিয়ের খাতে খরচা করাটা চোখে লাগার মতনই বিষয়। রাজ্যপালের আরও দাবি ইউরোপ বা অন্যান্য দেশের ধনীরা নিজের দেশে দান করেন, সমাজের উন্নয়নে গঠনমূলক কাজ করেন৷ কিন্তু এই পরিমাণ খরচা কেউ করেন না।
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, ‘এই সব ধনীদের সাংবাদিকরা যখন প্রশ্ন করেন তিনি কোনও দান করেন কীনা, তখন দেশের সম্পদ তাঁরা কীভাবে বৃদ্ধি করেছেন, তার তালিকা তুলে ধরেন তাঁরা৷ এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল৷ তিনি জানতে চেয়েছেন, ৭০০ কোটি টাকায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেশের সম্পদ কীভাবে বাড়াচ্ছেন তাঁরা?’ অভিযোগ মেয়ের বিয়েতে খরচ করা ৭০০ কোটি টাকায় ৭০০টা বড় স্কুল তৈরি হয়ে যেতে পারত৷ ৭০০০ শহিদ সেনাজওয়ানদের পরিবার তাঁর সন্তানদের পড়াশুনার খরচ যোগাতে পারতেন৷ কিন্তু সেসব কিছু না হয়ে মেয়ের বিয়ে হল বলে কটাক্ষ জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপালের৷
বস্তুত পৃথিবীর ধনকুবেরদের মধ্যে অন্যতম মুকেশ অম্বানি। তাঁর এই মুহূর্তে সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকা। প্রাক-বিবাহ উদযাপনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিয়ন্সে, ছিলেন হিলারি ক্লিনটন, গোটা বলিউড তো ছিলই। আর এভাবেই বিয়ের খরচ প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। বিশ্বের অন্যতম ধনী পরিবারের কাছে এই টাকার অঙ্কটা তেমন কিছু না হলেও, ভারতের মত দেশে খুব এই নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক।