উত্তপ্ত ভূস্বর্গ। কাশ্মীরি পণ্ডিত খুনের ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে জটিলতা। বৃহস্পতিবারের ওই প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয় পুলিশকে। তাদের বিরুদ্ধে জনতার উপর লাঠিচার্জেরও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল ভাটের খুনের প্রতিবাদে এদিন শ্রীনগরে মিছিল করেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। সেই মিছিল ধীরে ধীরে বিমানবন্দরের দিকে এগোতে শুরু করে। সেই কর্মসূচীতেই বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন প্রথমে মধ্য কাশ্মীরের বাদগাম জেলার শেখপোরা এলাকায় জমায়েত করেন বিক্ষোভকারী কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তারপর সেখান থেকেই শুরু হয় মিছিল। কিন্তু, সেই মিছিল কিছুটা এগোতেই পথ আটকে দাঁড়ান পুলিশের কর্মীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কোনও বিবাদে যেতে চাননি। তাই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের আবেদন করা হয়, তাঁরা যাতে মিছিল নিয়ে এগোনোর অনুমতি দেন।
এবিষয়ে অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের আবেদনে কর্ণপাত করেনি পুলিশ। তাদের পক্ষ থেকে মিছিল সেখানেই শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, বিক্ষোভকারীরা তাতে রাজি হননি। ফলে দুপক্ষের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। অভিযোগ, এরপরই রাস্তা ফাঁকা করতে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। ফাটানো হয় একের পর এক কাঁদানে গ্যাসের সেল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। ভেস্তে যায় গোটা কর্মসূচি। তবে, এই ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হননি বলেই জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার অফিসেই জঙ্গী হামলার শিকার হন ৩৫ বছরের রাহুল ভাট। স্থানীয় তহশিলদারের অফিসে ঢুকে তাঁকে পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে পালায় দুই জঙ্গী। রাহুল ওই অফিসেরই কর্মী ছিলেন। রোজের মতোই কাজে এসেছিলেন। কিন্তু, রোজের মতো আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁর। গোটা ঘটনার জন্য এখন প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তাঁদের বক্তব্য, নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকার এবং প্রশাসনের। অথচ সেই সরকারি অফিসের ভিতরে ঢুকেই একজন তরুণ সরকারি কর্মীকে খুন করে পালিয়ে গেল জঙ্গিরা! আমজনতার নিরাপত্তায় যে বিস্তর গাফিলতি রয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতির দাবি, “এমন একটা কঠিন সময়ে নিহত রাহুল ভাটের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে! কারণ, প্রশাসন তাঁকে গৃহবন্দি করে রেখেছে।” গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছেন আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ওমর আবদুল্লাও।
