রথযাত্রা ইস্যুতে যে মুখ পুড়েছে গেরুয়া শিবিরের, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টেই রথের চাকা বসে যাওয়ার পর অস্বস্তি এড়াতে বাংলা সফর বাতিল করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদীও। তবে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের ওপর এখনও যে ক্ষোভ যায়নি শাহর তা আবারও স্পষ্ট হয়ে গেল। গোটা বিষয়টায় বিজেপি সভাপতি এতটাই বীতশ্রদ্ধ যে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহার সঙ্গে প্রস্তাবিত বৈঠকে এলেনই না তিনি। ফলে বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, রামপালের সঙ্গে বৈঠক করেই ফিরতে হচ্ছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে।
রথযাত্রা ইস্যুতে মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে প্রস্তাবিত বৈঠক ঘিরে দিনভর চরম ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টে রথযাত্রা সংক্রান্ত মামলার গতিপ্রকৃতি কী হয়, তা দেখে নিয়েই রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন শাহ। সে নিয়েই দফায় দফায় দলের অন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে থাকেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। সেই দলে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, অন্যতম কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা, আরেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তবে শেষমেশ রাজ্য নেতৃত্বকে এড়িয়েই গেলেন শাহ।
বাংলায় তাদের রাজনৈতিক রথযাত্রার বাস্তবায়ন নিয়ে প্রথম থেকেই যথেষ্ট চাপে রয়েছে বিজেপি। এ নিয়ে যেরকম ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছে গেরুয়া শিবির। তার ওপর শাহ নিজে যেভাবে বারবার তার বাংলা সফরের কথা ঘোষণা করার পর মুহূর্তেই তা বাতিল করে দিচ্ছেন, তাতেও রাজ্যবাসী এবং কর্মী-সমর্থকদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশ।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে অন্তত ২২টি কেন্দ্রে জয়ের ‘দিবাস্বপ্ন’ দেখিয়েছেন খোদ শাহই। কিন্তু ভোটের প্রাক্কালে তাঁর দ্বারা বাংলা এবং বাংলার বিজেপি নেতাদের এমন এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। হতাশ দিলীপ, রাহুলরাও। অন্যদিকে, গতকালের প্রস্তাবিত বৈঠকে শাহের না আসাকে রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল।