সামনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আর তাতে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হিসাবে অ-কংগ্রেসি কোনও নেতাকে দাঁড় করাতে সক্রিয় তৃণমূল, আম আদমি পার্টির (আপ) মতো দল। রাজনৈতিক সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এখনও প্রকাশ্যে না এলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে। সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাই করে বিজেপির বিরুদ্ধে চোখে পড়ার মতো লড়াই দেওয়াটাই উদ্দেশ্য সব বিরোধী দলের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের প্রার্থীতে নারাজ তৃণমূল, আপ।
প্রসঙ্গত, গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীকে (মীরা কুমার) দাঁড় করানো হয়েছিল। বিরোধীদের পক্ষে উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী ছিলেন অ-কংগ্রেসি গোপাল গান্ধী। সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব চান না, এ বারেও একই ভাবে কংগ্রেসের প্রার্থীকেই সর্বসম্মত ভাবে বিরোধীরা বেছে নিন। সূত্রের বক্তব্য, প্রার্থী বাছাইয়ের এই রণনীতিতে তৃণমূল এবং আপ পাশে পাবে টিআরএস, এসপি-র মতো দলগুলিকেও।
সম্প্রতি বিচারপতিদের আলোচনাসভায় যোগ দিতে এক দিনের সফরে দিল্লী এসে অন্য কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক না করলেও আপ নেতা তথা দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ওই বৈঠকে উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সম্ভাব্য কৌশল। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের প্রবল প্রতিপক্ষ আপ। পাঞ্জাবে কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করে জেতাই শুধু নয়, হরিয়ানাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে কোমর বেঁধে নেমেছেন কেজরিওয়াল।
অন্য দিকে বাংলায় বিজেপিকে হারানোর পর তৃণমূল নেতৃত্ব জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধিতার ব্যাটন সেনিয়া গান্ধীর হাতে তুলে দিতে ঘোর অনিচ্ছুক। গোয়ার ভোটে কংগ্রেসকে তীব্র নিশানা করেছেন মমতা। গোয়ায় একাধিক কংগ্রেস নেতা যোগ দিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে। পাশাপাশি মেঘালয়ের ১২ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মুকুল সাংমা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। সুস্মিতা দেব, রিপুন বরার মতো নেতারা কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন মমতার ডাকে। স্বাভাবিক ভাবেই সনিয়ারও তিক্ততা বেড়েছে তৃণমূল প্রসঙ্গে।
সূত্রের বক্তব্য, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার যদি প্রার্থী হতে রাজি থাকেন, তা হলে কোনও বিরোধী দলেরই আপত্তি করার প্রশ্ন উঠবে না। প্রবীণ এই নেতার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং উচ্চতার কথা বিবেচনা করে তৃণমূল থেকে কংগ্রেস সবাই সমর্থন করবে। কিন্তু যদি পাওয়ার না দাঁড়ান, সেই ক্ষেত্রেও কংগ্রেস শিবিরের বাইরের কোনও রাজনৈতিক নেতা বা অরাজনৈতিক (প্রয়াত এ পি জে আব্দুল কালামের মতো) ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী হিসাবে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা থাকবে তৃণমূলের।
