এবার ফের কলকাতা পুলিশের বীরত্বের ছবি দেখল শহরবাসী। এবার জীবন রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আগুন লেগে যাওয়া বাড়ি থেকে বৃদ্ধাকে পিঠে করে উদ্ধার করে নিয়ে এলেন কলকাতা পুলিশের এক কর্মী। অক্ষত অবস্থায় প্রাণে বাঁচালেন চলাফেরা করতে না পারা মানুষটিকে। ঘটনার কথা কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে পোস্ট হতেই ধন্য ধন্য করছেন সকলে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ শ্যামবাজার পাঁচমাথা মোড়ের খুব কাছেই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের ওপর এক তিনতলা বাড়ির সিঁড়ি সংলগ্ন একতলায় একটি দোকানের রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়েই দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছোটেন শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের ওসি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি এবং শ্যামপুকুর থানার অ্যাডিশনাল ওসি।
তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, দাউদাউ করে জ্বলছে একতলার রান্নাঘর। জানা যায়, ওই বাড়িটিরই তিনতলায় একা থাকেন ৯৩ বছর বয়সি কল্পনা ধর। তাঁর ছেলে থাকেন বিদেশে। বৃদ্ধা হাঁটাচলা করতে পারেন না, সুতরাং সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসতে পারবেন না তিনি। এদিকে আগুন আস্তে আস্তে বাড়ছে। আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি প্রসেনজিৎ। ধোঁয়ায় ভরে যাওয়া সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে সোজা উঠে যান তিনতলায়।
কিছুক্ষণ পরেই অশক্ত কল্পনা দেবীকে নিজের পিঠে চাপিয়ে নীচে নেমে আসেন তিনি। আগাগোড়া তাঁর সঙ্গে ছিলেন কনস্টেবল শ্যামল সিং সর্দার। কিন্তু এরপরেও না থেমে নিজের মুখ ভাল করে ঢেকে আগুন লাগা ওই রান্নাঘরে ঢুকে পড়েন প্রসেনজিতবাবু। যে সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে, সেটি বাইরে বের করে আনেন যাতে বিস্ফোরণ ঘটলেও বাড়ির ভিতরে না ঘটে।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দমকলের ইঞ্জিন, কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিভিয়ে ফেলেন দমকলকর্মীরা। ঘটনায় কেউ আহত হননি।
নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে জ্বলন্ত বাড়ির উপরতলায় উঠে বৃদ্ধাকে পিঠে করে নামিয়ে আনার ঘটনায় সকলে এই বীর পুলিশকর্মীকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তাঁর সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরাও।