ক্রমশ এগোচ্ছে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি সংরক্ষণের ক্রিয়াকর্ম। এমনই জানাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। পাঁচ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ১২,৫০০ হেক্টরের এই প্রাকৃতিক দূষিত জল পরিশোধনাগারের জন্য আরও পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই পরিশোধিত জল ব্যবহার করতে হবে মাছচাষে। সেখানকার জলের মান নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করতে হবে। জলে নোংরা ফেললে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এর এলাকাও চিহ্নিত করতে হবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে যে মনিটরিং কমিটি গড়া হয়েছে, সেটি এরপরেও মাসে একবার করে বসতে পারে। সেই বৈঠকের বিবরণ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওয়েবসাইটে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, বেদখল হতে থাকা আন্তর্জাতিক রামসর সনদ অনুযায়ী সংরক্ষিত এই জলাভূমি রক্ষার্থে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত ২০১৬ সালে মামলাটি করেন। সল্টলেক থেকে রাজারহাট পর্যন্ত বিস্তৃত এই জলাভূমি রক্ষায় ট্রাইব্যুনাল বিভিন্ন সময়ে বেশকিছু নির্দেশ দেয়। তারই সূত্র ধরে তাকে সংরক্ষণের জন্য তৈরি হয় বিশেষ পরিকল্পনা। যা রূপায়ণের জন্য সম্ভাব্য খরচ ধরা হয় প্রায় ১১০ কোটি টাকা। যার ৬০ শতাংশ কেন্দ্র ও বাকি অংশ রাজ্যের দেওয়ার কথা। উল্লেখ্য, দিনে কলকাতার প্রায় ৮০০ মিলিয়ন লিটার দূষিত জল এই জলাভূমি পরিশোধন করে থাকে।
তবে এত কিছুর পরেও মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ওই জলাভূমি বুজিয়ে অজস্র বেআইনি নির্মাণ হয়ে চলেছে। কয়েকশো ক্ষেত্রে জলাভূমির চরিত্র পরিবর্তনের তথ্যও তিনি পেশ করেন। যার বহু ক্ষেত্রে এফআইআর হলেও আর কিছু হয়নি। বাসন্তী হাইওয়ের ধারে বেআইনি প্লাস্টিক কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও ফের চালু হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ হয়। ওই জাতীয় সড়কের ধারে জলাভূমির জমি দখল করে বেআইনি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চলার উদাহরণও পেশ হয়। জলাভূমি এলাকায় বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা থাকলেও, তা হয়নি বলেও অভিযোগ। এমনকী মোল্লার ভেড়ি ঘিরে বেড়া দেওয়াও সম্পূর্ণ না-হওয়ার অভিযোগ ছিল। যদিও বিধাননগর পুরসভার দাবি, ওই ভেড়ি ঘিরে দেওয়ার কাজ শেষ। এমনকী ওই ভেড়ি থেকে প্রায় এক লক্ষ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য পরিশোধনও করা হয়েছে। যে কাজ জুলাই মাসে শেষ হবে। তার জন্য আরও দু’টি বিশেষ যন্ত্রও বসানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।