পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বিশ্বনাথ সিং পেশায় সবজিবিক্রেতা। এলাকায় এলাকায় ঘুরে সবজি বিক্রি করেন তিনি। সেই তাঁকেই টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। ভোটে জিতে পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার পাশাপাশি তিনি এখন উপপ্রধানও। কিন্তু তারপরেও নিজের অতীতের পেশা ছাড়েননি তিনি।
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেরেন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান বিশ্বনাথ এখনও দিনমজুরের কাজই করেন। তাঁর স্ত্রী মানবী সিংও দিনমজুরি করেন। আসলে, দুই ছেলে নিয়ে মোট চারজনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় বিশ্বনাথ বাবুকে। তাই পেট চালাতে রোজ সকালে এলাকায় এলাকায় সবজি বিক্রি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন ভোর তিনটেয় উঠে সাইকেল চালিয়ে গুসকরা শহরে পৌঁছে যান বিশ্বনাথ। সেখানে পাইকারি দোকান থেকে শাকসবজি কিনে এলাকায় সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন তা। তারপর বাড়ি ফিরে এসে আবার যান ১৪ কিলোমিটার দূরের পঞ্চায়েত অফিসে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে হঠাৎই বিশ্বনাথ সিংকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সবাইকে অবাক করে জিতেও যান তিনি। পান পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের পদ। তারপর থেকে গত চার বছর ধরে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা কোনও ব্যতিক্রম নেই এই রুটিনের।
তাঁর স্ত্রী মানবী দেবী জানান, ‘আগে আমার স্বামী শাক-সবজি বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পর মাঠে কাজে যেতেন। এখন উপ-প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর সবদিন মাঠের কাজে যেতে পারেন না। তবে আমাকে এখনও জনমজুরের কাজ করতে হয়।’
জনপ্রতিনিধি হয়েও সবসময় মানুষের পাশেই থেকেছেন বিশ্বনাথ বাবু। নিজে মাটির দেওয়াল দেওয়া অ্যাসবেসটস ছাউনির একটি ছোটো কুঠুরি ঘরে বাস করেই কখনও ভাবেননি ক্ষমতা প্রয়োগ করে আখের গোছানোর কথা। তাই আজও হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেই চলে তাঁদের পেট।