প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের মাধ্যমে রাজকোষ ভরতে চাওয়াই টার্গেট মোদী সরকারের। ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রির ‘কৃতিত্বকে’ তুলে ধরে সাফল্যের ঢাক পেটাচ্ছেন মোদীর মন্ত্রীরা। তাঁদের পরের টার্গেট রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা এলআইসি। তবে প্রথমে ভাবা হয়েছিল ১ লক্ষ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে স্থির করা হল ৬৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বিগত আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে সেই পরিকল্পনাও ব্যর্থ হল। ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হলেও এলআইসির বেসরকারিকরণ কর্মসূচী নিয়ে এগোতেই পারেনি কেন্দ্র। নতুন অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে মোদী সরকার যখন ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজকোষে বিপুল টান পড়তে চলেছে, তখনই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকায় নেমেছে তারা।
আপাতত স্থির হয়েছে বেশি শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া রূপায়ণে যদি জটিলতার সৃষ্টি হয়, তাহলে আগামী একমাসের মধ্যে আগে ৫ শতাংশ এলআইসির শেয়ার বিক্রি করে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজকোষে আনার ব্যবস্থা করা হোক। কারণ একটাই। যত দিন যাচ্ছে ততই মোদী সরকারের অর্থ ভাণ্ডারের হাল উদ্বেগজনক দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা তো বটেই, এমনকী রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পর্যন্ত আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বছরের শেষে আর্থিক ঘাটতি বিপুল হতে চলেছে। মোদী সরকারের কাছে আয়ের কোনও বিকল্প পথই নেই। একমাত্র আয় জনগণের থেকে ট্যাক্স আদায়। গত আর্থিক বছরে প্রত্যক্ষ কর বাবদ শুধু ২৭ লক্ষ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। পাশাপাশি সরকার লাভজনক সরকারি সংস্থাও বিক্রি করে দিচ্ছে।
অর্থাৎ সাধারণ মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি না করে রাজস্ব সংগ্রহের কোনও পথই মোদী সরকার এখনও দেখাতে পারেনি। তাই পেট্রোল-ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও ভারতের সরকারি তেল উৎপাদন সংস্থাগুলি দাম কমায় না। এই অবস্থায় সরকারের সবথেকে লাভজনক সংস্থা এলআইসিকে বিক্রির জন্য বাছাই করা হয়েছে। গত আর্থিক বছরে অর্থাৎ গত মার্চ মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলার কথা ছিল। তা হয়নি। এবার আর টার্গেট পূর্ণ করার জন্য অপেক্ষা না করে তড়িঘড়ি ৫ শতাংশ শেয়ার আগে বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঝাঁপাচ্ছে সরকার। এই শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া ১২ মের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে।