কার্যত শনির দশা পদ্মশিবিরে। কাটছে না দুঃসময়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পর্যুদস্ত হয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকেই অব্যাহত শোচনীয় পরাজয়ের ধারা। একের পর এক উপনির্বাচন, পুর নির্বাচন হাতের আসন হাতছাড়া তো হচ্ছেই, বহু জায়গায় বামেদের দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসতে দেখা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় বাংলা বিজেপির বর্তমান নেতাদেরই কাঠগড়ায় তুললেন দিলীপ ঘোষ। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সরাসরি নিশানা করে দিলীপ স্বীকার করে নিলেন যে, “প্ল্যানিংয়ের অভাব আছে।”
উল্লেখ্য, বিধানসভার পর যত নির্বাচন হয়েছে সবেতেই ভোট কমেছে বিজেপির। নিজেদের দখলে থাকা শান্তিপুর, দিনহাটা বিধানসভা হাতছাড়া হয়েছে। সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনে দু’বারের জেতা আসানসোল লোকসভা বিপুল ভোটে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। দিলীপ ঘোষ কলকাতায় থাকলেই প্রত্যেকদিন সকালে হাঁটতে বের হন। বৃহস্পতিবার সকালেও যথারীতি দলবল নিয়ে সল্টলেক স্টেডিয়ামে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে বলেন, “কর্মীদের নিয়ে আমরা মাঠে নেমে লড়াই করেছিলাম। আমিও রাস্তায় নেমেছিলাম, পিছনে কর্মীরা ছিল। তাই মানুষ ভরসা করে আমাদের প্রধান বিরোধী করেছিল। সেই রোল যদি এখন প্লে না করি তাহলে মানুষ আমাদের বিরোধী আসনে রাখবে কেন!”
এরপর সুকান্ত মজুমদার সম্বন্ধে দিলীপ ঘোষ বলেন, “তিনি সবে দায়িত্ব পেয়েছেন, অভিজ্ঞতা কম।” এর পরই তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “যারা আগের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে, যাদের বিশ্বাস করে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল তাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে।” তাঁর এই মন্তব্য কার্যত রাজ্য বিজেপির অন্তর্কলহকেই উস্কে দিল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর ঘনিষ্ঠ সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারিদের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দেওয়াটা যে ভালোভাবে মেনে নেননি তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ এদিন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে তাঁকে নাম না করে ‘আহাম্মক’ বলেন। তাঁর সংযোজন, “৭২ হয়ে গেলে মাথা কাজ করে না!” দিলীপের এই মন্তব্য শুনে আবার তথাগত ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর বয়স কিন্তু আর কয়েক মাস পরেই ৭২ হয়ে যাবে। তখনও কি দিলীপবাবু এই কথা বলবেন?”