৭ টি ডার্বির পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখল লাল হলুদ শিবির। দুর্বল রক্ষণ আর ভুরি ভুরি মিস পাসের খেসারত দিতে হল মোহনবাগানকে। পিছিয়ে পরেও জয় ছিনিয়ে নিল ইস্টবেঙ্গল। ৩-২ গোলে জিতল লাল হলুদ ব্রিগেড।
একদিকে সোনি নর্ডে নেই। আরেকদিকে নেই এনরিকে এসকুয়েদা। অর্থাৎ দু’দলই আক্রমণভাগের শক্তি খুইয়ে এদিন মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাতে খেলায় আক্রমণের ঝাঁঝ এতটুকুও কমেনি। খেলা শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই গোল হয়ে যায়। ১৩ মিনিটের মাথায় গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন আজহারউদ্দিন মল্লিক। চার মিনিটের মধ্যে ডানমাইয়ার গোলে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল।
তবে তাঁর গোলটি নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে। এই সময় পাহাড়ি ফুটবলারটি অফসাইডে ছিলেন। যদিও ইস্টবেঙ্গলকে গোলটি দিয়ে দেন রেফারি। এরপর রেফারিং নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠতেই পারে। বার বার বাগান কর্তারা ফোর্থ রেফারির কাছে প্রতিবাদ জানান। খেলার গতি অবশ্য তাতে একটুও কমেনি। আক্রমণ–প্রতিআক্রমণে খেলা গড়াতে থাকে। বিরতির মিনিট দুয়েক আগে বাগান ডিফেন্সের ভুলে ব্যাক ভলিতে জবি জাস্টিনের গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধে লালকার্ড দেখে বাগান রক্ষণের অন্যতম স্তম্ভ কিংসলে বেরিয়ে গেলেও লড়াই করল শংকরলাল চক্রবর্তীর ছেলেরা। একদিকে যখন মোহনবাগান গোল শোধে মরিয়া, উল্টোদিকে পাল্টা আক্রমণ চালাতে থাকে ইস্ট বেঙ্গল। ৫৯ মিনিটে জোড়া হলুদ কার্ড দেখে লাল কার্ড দেখায় মাঠ ছাড়তে হয় কিংসলেকে। ১০ জনের মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পরের মিনিটেই গোল ডান মাইয়ার। ৩-১ এ পিছিয়ে পরে মোহনবাগান। উল্টোদিকে ১০ জনের মোহনবাগানকে পেয়ে ছিড়ে খেতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। হাল ছাড়েনি মোহনবাগান। ৭৩ মিনিটে ডিকার গোলে স্কোর লাইন হয় ৩-২। কিন্তু তাতে অবশ্য আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মোহনবাগান। ৩-২ গোলে জয়, ৩৩ মাস পর ডার্বি জিতলো ইস্টবেঙ্গল।
আই লিগের প্রথম ডার্বির শেষে অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে মোহনবাগান কোচ শংকরলাল চক্রবর্তীকে। মোহনবাগানের মতো ক্লাবের যে জমাটি রক্ষণের প্রয়োজন হয় তা কি আদৌ দেখাতে পারলেন সবুজ মেরুন ফুটবলাররা? ফুটবলারদের আদৌ বড় ম্যাচ খেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন তো? প্রথমার্ধে অন্তত সেই প্রস্তুতির ছাপ দেখা যায়নি। তাছাড়া কোচের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই জয়ের ফলে ডার্বির বদলা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিগের লড়াইয়েও বেশ খানিকটা উপরে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। অন্যদিকে ডার্বি হেরে চলতি আই লিগের লড়াইয়ে মোহনবাগান প্রায় তলিয়েই গেল বলা যায়।
