নিজেকে একজন ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য হিন্দী শেখার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই! বলছেন তামিলনাড়ুর খোদ বিজেপি নেতারা। শুধু তাই নয়, তাঁদের মতে প্রাচীন তামিল ভাষা জাতীয় সংযোগরক্ষাকারী ভাষা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। দ্রাবিড় সংস্কৃতির এই কেন্দ্রস্থলে ক্ষমতাসীন ডিএমকে এবং বিরোধী এআইএডিএমকে হিন্দি বা সংস্কৃতের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে একই অবস্থান নিয়েছে। এমনকি রাজ্য বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাইও জানিয়েছেন তাঁর দল তামিলনাড়ুর জনগণের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়াকে মেনে নেবে না।
‘কোনও ভাষা শিখে তারপরই নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার কোনও বাধ্যতামূলক পরিস্থিতি নেই। কর্মসংস্থান বা জীবিকার সমস্যার ক্ষেত্রে যে কেউ হিন্দি বা যে কোনও ভাষা শিখতে পারে’, বলেন কে আন্নামালাই। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আশা করেছিলেন যে সবাই তাঁদের আঞ্চলিক ভাষা শিখবে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণণের দাবি, ‘কোনও ভাষাকে ঘৃণা করার দরকার নেই তবে হিন্দি বা কোনও ভাষা দিয়ে তামিলকে প্রতিস্থাপন করা গ্রহণযোগ্য নয়’। বুধবার তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন (২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি) যে তামিল সবচেয়ে প্রাচীন ভাষা এবং এটি সংস্কৃতের চেয়েও পুরনো এবং সুন্দর। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, ইংরেজি শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের জন্য সর্বজনীন পছন্দের ভাষা
একই সুর কে আন্নামালাইয়ের গলাতেও। তিনি জানান, কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষা নীতিতে হিন্দি ঐচ্ছিক বিষয়। ‘কেউ যে কোনও আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনা করতে পারে। আমাদের সবচেয়ে বড় গর্ব হবে যখন তামিলকে দেশের সংযোগরক্ষাকারী ভাষা করা হবে’, বলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ‘আমি হিন্দী জানি না। আমি জানি না এখানে আমাদের মধ্যে কতজন সেই ভাষা জানি। আমরা শিক্ষা, চাকরি বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে হিন্দী শিখতে পারি, কিন্তু এটা চাপিয়ে দেওয়া যায় না’, বলেন প্রাক্তন এই আইপিএস অফিসার৷
‘তামিল আমাদের মাতৃভাষা এবং আমরা ভাষার ইস্যুতে আপস করতে পারি না। তবে, কোনও ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই’, বলেছেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কারু নাগরাজন৷ অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, হিন্দি ইংরেজির বিকল্প হতে পারে এবং হিন্দি দেশের সরকারি ভাষা হতে পারে।