বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোকে এক হওয়ার ডাক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে সাড়াও মিলছে। তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ ছিল, বিজেপির কাছে বারবার হারছে কংগ্রেস। এবার মমতার সুরেই সুর মেলাল কেরালা সিপিএম। বিজেপি বিরোধিতায় ইউপিএ-র পুনরাবৃত্তি নয়। কারণ কংগ্রেসের বিজেপি বিরোধিতা প্রশ্নের মুখে। আন্তরিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে। তাই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে অবিজেপি আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে জোট হোক। সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে দাবি তুলল কেরালা সিপিএমের হেভিওয়েট প্রতিনিধিরা। যদিও কেরালা লবির প্রবল বিরোধিতার মুখেও শেষ হাসি হাসলেন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসে বদল হয় সিপিএমের রাজনৈতিক রণকৌশল লাইন। বিজেপি ও কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের নীতি থেকে সরে আসে সিপিএম। ঘুরপথে কংগ্রেসকে জোটে আনতে নেওয়া হয় বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জোটের লাইন। তখনও কেরালা লবির প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েছিলন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বঙ্গ সিপিএমকে পাশে নিয়ে সুকৌশলে বদল আনেন রাজনৈতিক রণকৌশলের লাইনে। চার বছর পরেও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। এই যুক্তিতে আগের লাইনেই স্থির থাকে সিপিএম। যদিও জানুয়ারি মাসে দিল্লীতে হয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে প্রথা ভেঙে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন পালটা দলিল পেশ করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন দেয়নি।
তবে বিজয়ন ছেড়ে দেওয়ার মানুষ নন। পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে প্রথমদিন থেকেই তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন ইয়েচুরি ও বঙ্গ সিপিএমের নেতারা। পার্টি কংগ্রেসে রাজনৈতিক রণকৌশল লাইনের উপর আলোচনার সময় প্রথমেই মাঠে নামান একসময় রাজ্যসভার সেরা সাংসদ ও কেরালার শিল্প আইনমন্ত্রী পি রাজীবকে। বিজয়নের হয়ে দুরন্ত ব্যাটিং করেন তিনি। কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্য রাখলে পার্টির কতখানি ক্ষতি তার পক্ষে একের পর এক যুক্তি খাড়া করেন। এর মধ্যেই বিজেপির বিরোধিতায় কংগ্রেসের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দলের আরেক শীর্ষনেতা প্রকাশ কারাত। সুযোগ পেয়ে কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেন কেরালা বিধানসভার অধ্যক্ষ কে কে রাজেশও। পার্টির সাধারণ সম্পাদক যে রাজনৈতিক রণকৌশলের লাইন আলোচনার জন্য পেশ করেছেন তাতে বদল আনার দাবি করেন তিনি। তার দাবি ছিল, এমন রাজনৈতিক রণকৌশল লাইন নেওয়া হোক যেখানে কংগ্রেস ব্রাত্য থাকবে। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই যে দাবি করে আসছেন মমতা।