রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রাশিয়া ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে মস্কো। গত বৃহস্পতিবার থেকেই ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার মিলিটারি অপারেশন চলছে। আর এই সংঘাতের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভারতেও। বিশেষ করে ভারতের সেনা এবং কৃষকদের ওপরে এর প্রভাব বেশি পড়ছে। কারণ রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশ থেকেই ভারতে প্রচুর জিনিস আমদানি করা হয়। যেমন ভারতের বিভিন্ন ধরনের ফার্টিলাইজার কোম্পানির তরফে রাশিয়া থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ টন ডাই অ্যামিনো ফসফেট আমদানি করা হয়। দুই দেশের সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই ব্যবসা প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ টনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়াও ভারত ২০২০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে সেই দেশ থেকে পটাশ আমদানি করার জন্য। ভারত প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ টন নাইট্রজেন, ফসফরাস এবং পটাশ ক্রয় করার চেষ্টা করছে। ২০২০ সালে ভারত শুধুমাত্র রাশিয়ার থেকেই ৬১ কোটি ডলারের ফার্টিলাইজার আমদানি করেছে। এর ফলে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ বাড়তে থাকলে সমস্যায় পড়বে ভারতের কৃষকরা। আবার, ভারতের কাছে রাশিয়ার তৈরি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র এবং হাতিয়ার রয়েছে। সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম ক্রয় করার কথা। এর মধ্যে মাত্র এক চতুর্থাংশ সাপ্লাই করা হয়েছে রাশিয়া থেকে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারত যত অস্ত্র ক্রয় করেছিল, তার মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশই রাশিয়ার। এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ বাড়তে থাকলে ভারতের পক্ষে তা খারাপ হতে পারে। এর ফলে সমস্যায় পড়তে পারে ভারতীয় সৈন্য। অন্যদিকে, ভারত ইউক্রেনের থেকেও ভাল পরিমাণে ফার্টিলাইজার আমদানি করে থাকে। ২০২০ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী ভারত ইউক্রেন থেকে প্রায় ২৩.২৮ কোটি ডলারের ফার্টিলাইজার আমদানি করেছিল। এছাড়াও ভারতে সূর্যমুখী তেলের মোট পরিমাণের ৭০ শতাংশই আসে ইউক্রেন থেকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ বাড়তে থাকলে এই সকল জিনিসের দাম বেড়ে যেতে পারে। কারণ আমদানি না হলে এমনিতেই সেই সকল জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।