শেষ হল দীর্ঘ লড়াই। বহুদিন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার সকালে মুম্বইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। সকালে দুঃসংবাদ পেয়েই টুইটে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বেশ কয়েকদিন ধরেই সাধন পাণ্ডের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন চিকিৎসকরাও। মেয়ে শ্রেয়া শনিবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবাকে নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছিলেন। শেষমেশ রবিবার সকালে হাসপাতালেই জীবনাবসান হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
উল্লেখ্য, মোট ৯ বারের বিধায়ক সাধন পাণ্ডে। প্রথমে তিনি কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। তখন তাঁর কেন্দ্র ছিল বড়তলা। ৬ বার এখান থেকেই জিতেছেন। পরবর্তীতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তিনি মমতার পাশে থেকে লড়াই করেছেন। মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরপর তিনবার ভোটে জিতে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড হয়েছে তাঁর। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে প্রতিবারই তাঁকে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সাধন পাণ্ডের নেতৃত্বেই ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের কাজের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্যজুড়ে। খুব সাফল্যের সঙ্গেই এই কাজ সামলে জনপরিষেবাকে আরও উন্নত করেছিলেনো তিনি।
বিগত বিধানসভা ভোটে অসুস্থ শরীরে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জেতার পর তাঁকে মন্ত্রিসভায় রাখলেও কোনও দায়িত্ব দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অধীনে থাকা ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরটি প্রথমে শশী পাঁজা ও পরে মানস ভুঁইঞাকে দেওয়া হয়। ফলে দফতরহীন মন্ত্রীই ছিলেন সাধন পাণ্ডে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মুম্বইয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নিয়মিত তাঁর খোঁজখবর নিতেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দলের বর্ষীয়ান সহযোদ্ধার প্রয়াণের খবর পেয়ে শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে শোকবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি সাধন পাণ্ডের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবারই বাবার সংকটজনক অবস্থার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন তাঁর কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডে। “বাবার জন্য কি কিছুই যথেষ্ট নয়?” এই পোস্ট লিখে একটি ছবি দিয়েছিলেন। তাতেই বোঝা গিয়েছিল, কতটা ভেঙে পড়েছেন শ্রেয়া। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিনই মুম্বই থেকে সাধন পাণ্ডের দেহ আনা হবে কলকাতায়। দমদম বিমানবন্দরে থাকবেন দুই মন্ত্রী, শশী পাঁজা ও সুজিত বসু। পুরো বিষয়টি তদারকি করে মরদেহ পিস হাভেনে নিয়ে যাবেন তাঁরা। আজ সারাদিন সেখানেই থাকবে সাধন পাণ্ডের দেহ। অন্তেষ্টিক্রিয়া নিয়ে এখনও কোনও পরিকল্পনা হয়নি, এমনই জানাচ্ছে সূত্র।