সংসদে রাফাল, সিবিআই, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত আলোচনা এড়াতেই বিজেপি তাদের শরিক ও বন্ধু দলগুলিকে গন্ডগোল পাকানোর জন্য মাঠে নামিয়েছে বলে অভিযোগ তুলল বিরোধীরা। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, শিবসেনা কিংবা এডিএমকে-র মতো দলগুলি ইচ্ছে করেই গন্ডগোল পাকাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘কৃষকদের দুরবস্থা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সিবিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা, মূল্যবৃদ্ধি ও রাফাল নিয়ে বিরোধীরা আলোচনা চাইছেন। কিন্তু সরকার পক্ষ যে আলোচনায় যেতে রাজি নয়, তা স্পষ্ট হচ্ছে প্রতি দিনই। কোনও যুক্তি ছাড়াই অধিবেশন সারা দিনের জন্য মুলতুবি করে দিচ্ছেন চেয়ারম্যান’।
অধিবেশনের শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিল বিজেপি। তারই মধ্যে তিন রাজ্যে বিধানসভায় হার। বুধবার সব মিলিয়ে দু’টি কক্ষের অধিবেশন পাঁচ মিনিটের বেশি চলেনি। বৃহস্পতিবারও রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই হট্টগোল বাধে। সারা দিনের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে দেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু।
লোকসভায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হতেই একধিক দল ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ওয়েলে নামেন বিজেপির শরিক শিবসেনা ও অঘোষিত বন্ধু এডিএমকে-র সাংসদেরা। প্রথমে কুড়ি মিনিট ও তার পরে বেলা ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। ১২টায় লোকসভায় রাফাল নিয়ে বলতে চেয়ে নোটিস দিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ সুনীল জাখর। স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ফ্লুরোসেন্ট রঙের ভেস্ট পরেও আসেন তিনি। অন্য দিকে, রামমন্দির নিয়ে বলার জন্য নোটিস দিয়েছিল শিবসেনা। স্পিকার শিবসেনা সাংসদ আনন্দরাও আদসুলেকেই বলতে দেন রামমন্দির নিয়ে। তাঁর পরে বলতে ওঠেন বিজেপির মীনাক্ষি লেখি। তাঁর বক্তব্য শেষ হতেই হট্টগোলের কারণ দেখিয়ে সারা দিনের জন্য লোকসভা মুলতুবি করে দেন স্পিকার।
এই পরিস্থিতিতে শীতকালীন অধিবেশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘বিষয় নির্ধারক কমিটির আলোচনা দেখে মনে হয়েছে, ভোটাভুটি হতে পারে এমন কোনও আলোচনায় যেতে রাজি নয় সরকার’। একাধিক বিরোধী নেতার অভিযোগ, এই প্রথম দেখছি, কোনও সরকার-পক্ষ নিজে থেকেই অধিবেশন ভেস্তে দিতে মরিয়া। আগেও সম্পূর্ণ অন্য বিষয় নিয়ে হট্টগোল পাকিয়ে বিজেপি সরকারের সুবিধা করে দিয়েছে এডিএমকে। এ বারেও সেই কাজটিই করছে তারা।