‘হিজাব পরে শিক্ষায়তনে ঢুকতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন মুসলিম মহিলারা। কিন্তু হিন্দু ধর্মের নানা চিহ্ন বহন করে শিক্ষায়তনে ঢুকছেন অনেকেই। তাঁরা কোনও বাধার মুখে পড়ছেন না’। এক খোলা চিঠিতে এমনই মন্তব্য করেছেন ৭০০ পেশাজীবী ও ছাত্রছাত্রী। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বক্তব্য, ‘যে ছাত্রছাত্রীরা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করেন, তাঁরা প্রতিদিন বিন্দি, তিলক, বিভুতি ইত্যাদি ধারণ করে শিক্ষায়তনে যেতে পারেন। কিন্তু মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরলে যে প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে হচ্ছে, হিন্দুদের তা পড়তে হয় না’।
কর্নাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে বলেছে, ছাত্রছাত্রীরা কেউ হিজাব, গেরুয়া চাদর বা অন্য কোনও ধর্মীয় চিহ্ন বহন করে শিক্ষায়তনে আসতে পারবেন না। চিঠিতে ওই নির্দেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশ এবং অমর সরণ, কর্নাটক রাজ্য পশ্চাৎপদ শ্রেণি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন সি এস দ্বারকানাথ, প্রবীণ আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার, সঞ্জয় পারিখ, মিহির দেশাই, অশোক আগরওয়াল এবং গায়ত্রী সিং। এছাড়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘মুসলিম তরুণীদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। হিজাব পরার জন্য মুসলিম তরুণীদের শিক্ষায়তনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না’। পরে লেখা হয়েছে, ‘কর্নাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেওয়ার পরে আমরা লক্ষ করেছি, মুসলিম তরুণীদের প্রকাশ্যে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের স্কুল-কলেজে ঢোকার আগে হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসন এমনই নির্দেশ দিয়েছিল।’
একইসঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘প্রকাশ্যে মুসলিম মহিলাদের হিজাব খুলতে বাধ্য করা অমানবিক, অপমানজনক ও সংবিধানবিরোধী। আমরা তাঁদের মৌলিক অধিকার ও সম্মান রক্ষা করতে পারিনি। সেজন্য লজ্জায় আমরা মাথা নত করছি।’