অন্তর্দ্বন্দ্বের অশনি সংকেত এখনো তাড়া করে বেড়াচ্ছে পদ্মশিবিরকে। পুরভোটে ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে চাপের মধ্যেও দলীয় কোন্দলের আবহ থেকে মুক্ত হতে পারছে না রাজ্য বিজেপি। মঙ্গলবার দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলীর সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপির বিদ্রোহী নেতা তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সাংগঠনিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে মতুয়া বিধায়কদের বেরিয়ে যাওয়া থেকে বিদ্রোহী সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদারদের নিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন, সবেতেই নেতৃত্বে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুকে। তাঁরই নেতৃত্বে প্রথম বার কলকাতায় বিদ্রোহীদের বৈঠক বসেছিল। এ বার উত্তরাখণ্ডে গিয়ে লকেটের সঙ্গে শান্তনুর বৈঠক ঘিরে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য বিজেপিতে। বিদ্রোহীদের দাবি, লকেট তাঁদের সঙ্গেই আছেন। তবে এ ব্যাপারে লকেট মুখ খোলেননি। তিনি বলেন, “দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কিছু কথা তো অবশ্যই হয়েছে। তবে সেটাকে বিদ্রোহ বা অন্য কোনও বিশেষণ দেওয়া ঠিক হবে না। আমি উত্তরাখণ্ডে সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছি। শান্তনু প্রচারে এসেছিলেন। সেখানে দেখা হয়েছে। দীর্ঘ সময় আমরা একসঙ্গে ছিলাম। নানা বিষয়ে কথাও হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, লকেট খোলাখুলি কিছু বলতে না চাইলেও জানা গিয়েছে, এই বৈঠক আগে থেকেই নির্দিষ্ট ছিল। উত্তরাখণ্ডের উধম সিংহ নগর জেলার তিন-চারটি বিধানসভা এলাকায় অনেক মতুয়া ভোটার রয়েছেন। সেই সব এলাকায় মূলত লকেটের আমন্ত্রণেই প্রচারে গিয়েছেন শান্তনু। রুদ্রপুর বিধানসভা এলাকায় প্রচারে গিয়ে স্থানীয় রুদ্র হোটেলে ওঠেন শান্তনু। সেখানেই দীর্ঘ সময় লকেটের সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে জানা গিয়েছে। পরে স্থানীয় একটি মাঠে মোদীর ভার্চুয়াল জনসভায় যোগ দেন দু’জনে। সেখানেও মঞ্চের এক পাশে বসে বাংলার দুই নেতাকে কথা বলতে দেখা যায়।হরাজ্য কমিটি থেকে অনেক পুরনো নেতাকে বাদ দেওয়া, সব সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব না থাকা এবং জেলা কমিটি গঠনে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ তোলেন শান্তনু। তাঁর সুরে বিদ্রোহ করেছেন অনেকেই। এর মধ্যে শান্তনু দিল্লীতে দরবার শুরু করেছেন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে কথা হয়েছে শান্তনুর। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন পর্যন্ত শান্তনুকে অপেক্ষা করতে বলেছেন নড্ডা, এমনটাই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তারই মধ্যে সম্প্রতি আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে দেখা করেন শান্তনু। দিল্লীতে তিন জনের বৈঠক হয় বলেও জানা যায়। তখন থেকেই জল্পনা, রাজবংশী নেতা নিশীথও কি মতুয়া নেতা শান্তনুর সঙ্গে রয়েছেন? এ বার জল্পনা শুরু হল বর্তমান রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা লকেটের। স্বভাবই চাপে পদ্ম-পরিবার।
