ত্রিপুরা জিতবই, তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারপার্সন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার পরেই জোর কদমে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে জোড়া ফুল শিবির। লক্ষ্য ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচন নতুন বছরের শুরু থেকেই বিধানসভা ভোটে ভাল ফলের লক্ষ্যে ত্রিপুরায় ঝাঁপাতে চলেছে তৃণমূল।
ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় রাজভবন অভিযান করেছে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেস। আইনশৃঙ্খলা থেকে কর্মসংস্থান সহ একাধিক ইস্যুতেই ত্রিপুরায় আন্দোলন শুরু করছে জোড়া ফুল শিবির৷ ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ১৫ দফা দাবিতে রাজভবন অভিযান করা হয়েছিল। সেই পনেরো দফা দাবিকে সামনে রেখেই রাজ্য জুড়ে জোরদার আন্দোলন করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
যে যে ইস্যুতে তারা আন্দোলন করবে, সেগুলি হল রাজ্যের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, প্রতিনিয়ত মহিলা নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন, ব্যাপকহারে বাড়িঘর দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট, বিরোধীদলের কর্মী নেতাদের উপর আক্রমণ, কাৰ্য্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া, সংবাদপত্রের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া, সাংবাদিক নিগ্রহ এবং সাধারণ জনগণের উপরে প্রতিনিয়ত আক্রমণ ও হেনস্থা তথা বাইক বাহিনীর দৌরাত্মের প্রতিবাদে এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি।
এই সব ইস্যু নিয়ে আন্দোলন হবে বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক। তৃণমূলের অভিযোগ, পৌর নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে ছাপ্পা ভোট, বুথ দখল, প্রার্থী সহ ভোটারদের ভোট দিতে না দেওয়া, প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের উপরে ভয়ঙ্কর আক্রমণ- এই সব কাজে জড়িত দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে।
সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরইজিএ মজুরি দ্বিগুণ করতে হবে এবং আরইজিএ কাজ ন্যূনতম ২০০ দিনের করতে হবে এই দাবিতে। সমস্ত অনিয়মিত কর্মচারীকে অবিলম্বে নিয়মিতকরণ করতে হবে। প্রায় ১৮০০০ অঙ্গনওয়ারী কর্মী ও সহায়কদের এবং পাশাপাশি আশাকর্মীদের ওচ নিয়মিতকরণ করে বেতন-ভাতা প্রদান করতে হবে এই দাবীও রাখছে তৃণমূল।
সারা রাজ্যে বিশেষ করে গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। ধর্মনগর থেকে আগরতলা জাতীয় সড়কের কাজ অবিলম্বে সম্পূর্ণ করতে হবে এবং নিম্নমানের কাজের জন্য দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে এই দাবিতে। রাজ্যের পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে শিক্ষার বেসরকারীকরণ বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে চরম নৈরাজ্য ও দুর্নীতি রোধের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবী করছে তৃণমূল। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে সরকার। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতিশ্রুতি থাকলেও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী রেফার করে অনৈতিক কাজ চলছে বলে অভিযোগ। এ রকমই একাধিক দাবি নিয়ে জোরকদমে আন্দোলন শুরু করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিগত চার বছর নিয়োগে প্রায় বন্ধ, বেসরকারি সংস্থাকে কর্মী নিয়োগের বরাত দিয়ে রাজ্যের বেকারদের ভাতে মেরে বাইরের রাজ্যের প্রার্থীদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসকে বিকলাঙ্গ করে বাইরের রাজ্যের বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ নিশ্চয়ই স্বচ্ছতার স্বাক্ষর বহন করে না।
আবগারি থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ বিভাগ সহ বিভিন্ন ব্যবসায় বাইরের রাজ্যের অধিবাসীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের লক্ষাধিক বেকার যুবক-যুবতীদের বঞ্চনা করে অথচ রাজ্যের হাজার হাজার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য চুক্তিভিত্তিক কাজের চুক্তি করা স্বত্বেও আজ পর্যন্ত কেউ সরকারি দফতর থেকে কোনও কাজ পায়নি বলে অভিযোগ করছেন তিনি।
অবিলম্বে রাজ্যের বেকারদের জন্য সরকারি চাকিরি বা অন্যভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা অথবা তাদের বেকার ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের বঞ্চনা করে বাইরের রাজ্যের অধিবাসীদের সুযোগ করে দেওয়া বন্ধ করতে হবে এই দাবিতে তাদের আন্দোলন হবে।