বাজেটে বড়সড় ধাক্কা খেলেন কৃষকরা। সার ভর্তুকিতে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। যা গত বাজেটের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ কম। ফলে সারের দাম আকাশ ছোঁবে বলে মনে করছেন কৃষিজীবী মানুষেরা।
২০২২-২৩ বাজেটে সারে মোট ১,০৫,২২২ কোটি টাকার ভর্তুকি ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২১-২২-এর বাজেটে তা ছিল ১,৪০, ১২২ কোটি টাকা। যা প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। কেন্দ্রীয় সরকার মূলত নাইট্রোজেন (ইউরিয়াতে) সারে ভর্তুকি দেয়। ফসফেট, পটাশ সারের জন্যও রয়েছে সামান্য ভর্তুকি। ফলে সরকার নির্ধারিত দামে কৃষকেরা সার কেনেন। বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ার ফলে সেই সারের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইউরিয়া সারে ভর্তুকি কমানোয় সবচেয়ে বেশি হতাশা দেখা গিয়েছে। চলতি বাজেটে ইউরিয়াতে ৬৩.২২২.৩২ কোটি ভর্তুকি ঘোষণা করেছেন নির্মলা। যা গত বাজেটের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম। এছাড়া এনপিকে (নাইট্রোজেন, ফসফেট, পটাশ) সারে ৪২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কম।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্তরে সারের সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে। ঠিক এই সময়েই সারের ভর্তুকি কমাল মোদি সরকার। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সরবরাহ কমলে আগামীদিনে কৃষকদের দুর্গতি বাড়তে পারে। যদিও বাজারে সারের ঘাটতি নেই বলে দাবি করেছে কেন্দ্র।কিন্তু গত বছরের অক্টোবরেই সার সরবরাহে বড় ধরনের সঙ্কট আসার ইঙ্গিত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের সার বিভাগ।
ইতিমধ্যেই সারের সঙ্কট নিয়ে আওয়াজ তুলছেন কৃষকরা। বিভিন্ন রাজ্যে এই নিয়ে পথেও নেমেছেন তাঁরা। গত বছরের অক্টোবরে সারের ঘাটতির সমস্যা মেটানোর দাবি নিয়ে যোগী রাজ্যের মাহোবায় বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। বুন্দেলখণ্ডে সারের ওভাবে ৫ কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে সার ভর্তুকি বড় ইস্যু হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কৃষকরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চাষের ক্ষতি হচ্ছে। কখনও অতিবৃষ্টি, কখনও বা অকাল বৃষ্টিতে ফসলের উৎপাদন কমে গিয়েছে। বন্যার ক্ষতির পরেও ফসল বিমা যোজনা থেকে ক্ষতিপূরণও ঠিক মতো পাচ্ছেন না অনেকেই। বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচের খরচও বেড়েছে। এ বারের বাজেটের পরে সারের দাম আরও বাড়বে। এ ভাবে খরচের বহর বাড়তে থাকায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের।