পেরোয়নি এক সপ্তাহও! তার আগেই ঘটল বিপত্তি। পরপর দু-দিন নিভে গেল নেতাজী মূর্তির হলোগ্রামের আলো। গত ২৩শে জানুয়ারি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের দিন ঘটা করে ইন্ডিয়া গেটের অদূরে নেতাজী মূর্তির হলোগ্রাম স্থাপন করে মোদী সরকার। ওই একই স্থানে পঞ্চম জর্জের একটি মূর্তি ছিল যা ১৯৬৮ সালে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, প্রজাতন্ত্র দিবসের নেতাজির ট্যাবলো-বাতিল বিতর্কে ইতি টানতেই, কেন্দ্র সরকার নেতাজীর মূর্তি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারি বিজেপি সরকার অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বান শিখাকে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের শিখার সঙ্গে মিলিয়ে দেয়। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে শহীদ সেনাদের বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের স্মৃতিতে অমর জওয়ান জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত করা হয়েছিল, এত দিন ধরে তা অনির্বান ছিল। এই জ্যোতি মিলিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মোদী সরকারকে নানান মাধ্যমে তীব্রভাবে সমালোচিত হতে হয়েছিল। অনেকের মতে, সেই বিতর্ক থামাতেও হাতিয়ার করা হয়েছে দেশনায়কের মূর্তি স্থাপনকে।
উল্লেখ্য, মূর্তি স্থাপন করার সময় মোদী বলেছিলেন যে নেতাজীর গ্রানাইট মূর্তি স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত এই হলোগ্রাম মূর্তি এখানে থাকবে। সংস্কৃতি মন্ত্রক সূত্রে খবর, দিল্লীর ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এর একটি দল ঐ স্থাপন নির্মাণের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু মোদীর কথা আর সত্যি হল না। হলোগ্রাম মূর্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাঁধল বিপত্তি। ২৮ শে এবং ২৯শে জানুয়ারি পরপর দুদিন নিভে গিয়েছিল হলোগ্রাম মূর্তি। যদিত সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। ২৯শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের ড্রোনের শো চলাকালীন, হলোগ্রামের সেন্ট্রাল ভিস্তার দিকের অংশ প্রজ্জ্বলিত থাকলেও ইন্ডিয়া গেটের দিকের অংশটি ছিল অন্ধকার। ২৯শে জানুয়ারি এক বেসরকারি সাংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক গার্গী রাওয়াত নেতাজি মূর্তির ছবি টুইট করেন। যেখানে দেখা যায়, শুধু বাহ্যিক গঠন রয়েছে কোনো হলোগ্রাম নেই। যদিও দুদিনের ঘটনায় সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দু’দিনই হাওয়ায় হলোগ্রামের যন্ত্রাংশ পড়ে গিয়েছিল। যা সারানো হয়েছে। নেতাজী সুভাষচন্দ্রের মতো একজনের মূর্তি স্থাপন করে, তা ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণে না করে বিজেপি সরকার পুরো বিষয়টিকে ছেলেখেলার পর্যায়ে নামিয়ে আনলো। এতে দেশনায়কের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হল বলেই মনে করছেন অনেকে।