৫ রাজ্যেই ভোটে হেরে শোচনীয় ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। যদিও এই ফলাফল প্রত্যাশিত ছিলই তবু নিজেদের এমন ‘গো-হারা’ অবস্থা মানতে পারছেন না বিজেপির কেউই। বিজেপির অন্দরমহলে এখন কার্যত শোকের হাওয়া! এরকম নিদারুণ পরাজয়ের পর থেকেই নেতারা কেউই প্রকাশ্যে আসেন নি, কর্মীরা পর্যন্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নি। এমনকি মোদী-অমিতও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বিজেপির এমন মুহ্যমান দশা চোখে পড়ল তাঁদের বাংলার ঘাঁটিতেও। বাংলায় বিজেপির বাংলায় রাজ্য দপ্তর ৬ মুরলীধর সেন লেনও মঙ্গলবার থেকে রীতিমত ঝিমিয়ে পড়েছে।শুধু তাই নয়, যে সাধারণ মানুষের আশা নিয়ে তাঁরা এতদিন খেলেছেন, তাঁরাই বাক্যবাণে বিদ্ধ করছেন।রীতিমত বিদ্রুপ করছেন, ‘গো মাতা কি সন্তানদের ওপর থেকে আশীর্বাদী হাত তুলে নিলেন’? এসব বলে৷
আসলে কিছুই বলার মুখ নেই বিজেপির। যেভাবে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল বিজেপি এবং মানুষের জন্যে কাজ করার থেকে রাম মন্দির প্রসঙ্গকেই অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছিল তাতে এই ফলই যে হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। ফল ঘোষণার পর থেকেই বিমর্ষতা নেমে আসে সমস্ত বিজেপি দফতর গুলিতে। এমনি সময়ে সপ্তাহের যে কোন দিনে ৬ মুরলীধর লেনে কারজালয়ের সামনে ভিড় থাকে, বিজেপি কর্মীদের আনাগোনাও লেগে থাকে। তবে এমন ভাবে মুখ থুবড়ে পরার পর থেকে উধাও সেই ভিড়।
তবে এই ভিড় না থাকা শাপে বর-ই হয়েছে সাংবাদিকদের। তাঁরা নিশ্চিন্তে অন্দরমহলের ভেতরে গিয়ে শোকের আবহ পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন। এই রকমই হাল বাকি বিজেপি দফতর গুলিতেও। কোথাও বাইরের কারোর প্রবেশ নিষেধ তো কোথাও কারোর দেখাই মিলছে না, কেউ বা দেখা দিলেও মুখে কুলুপ আটকেছেন।
দক্ষিণ কলকাতার দিকে বিজেপির এক উঠতি নেতা পার্থ, তাঁর এলাকায় পুরভোট হচ্ছে। তিনি হয়ত আশা করেননি, এমনি বিপাকে পরতে চলেছে দল। তিনি খুব সাহস নিয়ে তাঁর এলাকাতে দেওয়াল দখল করে রেখেছিলেন, ঠিক করেছিলেন, বৃহস্পতিবার হোয়াইটওয়াশ–করা দেওয়ালে বিজেপি–র রথযাত্রা নিয়ে লিখবেন। কিন্তু বুধবার তিনি সঙ্গীদের বললেন, ‘এখন থাক, রথযাত্রা–বৈঠকে কী হয় দেখি, তার পর…’। আগেভাগে এভাবে দেওয়াল দখল করা দেখে অনেকেই বলেছেন, আসন দখল পরে হবে, আগে হোক দেওয়াল দখল।’
শুধু পার্থকেই নয়, কর্মীদেরও এমন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এক কর্মীর জানিয়েছেন, মানুষ বলছে গো-মূত্র খেয়েও লাভ হল না? যারা ভোট দিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছিল তাঁদের থেকে গোরুকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার ফল হাতেনাতে পাচ্ছে বিজেপি। মানুষ যে কোনভাবেই এমন গো-রাজনিতিকদের আর চাইছেন না তা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিচ্ছেন স্বয়ং জন সাধারণই।