চীন নিয়ে মোদী সরকারের নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই। জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করছে তারা। বারবারই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে আসছেন রাহুল গান্ধী-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। এবার দেখা গেল তাঁদের এই অভিযোগ একেবারেই ভ্রান্ত নয়। কারণ, প্যাঙ্গং লেক থেকে সরে গেলেও পুরোপুরি সেনা তোলেনি চীন। বরং প্যাঙ্গং থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে রুটগ ঘাঁটিতে নতুন করে কাঠামো বানাতে দেখা গেছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মিকে। নতুন উপগ্রহ চিত্র দেখিয়েছে, প্যাঙ্গং লেকের ওপর সেতু তৈরি করছে চীন। সেই সেতু বানানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে। পাহাড়ি খাঁজ তথা ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোতে অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে। নতুন করে রাইফেল ডিভিশন বসাচ্ছে চীন।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা এখনও ব্যর্থ। ১৪ তম সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেও বরফ গলেনি। পূর্ব লাদাখ সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে রাজি নয় চীন। বিশেষ করে কুড়ি সালে ভারত ও চীনা সেনার মধ্যে যেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল সেই গোগরা ও হট স্প্রিং এলাকায় এখনও নিজেদের আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লাল ফৌজ। পাশাপাশি দেপসাং ভ্যালিতেও সেনা মোতায়েন করে রেখেছে চীন। নতুন উপগ্রহ চিত্র দেখাচ্ছে, উত্তর প্যাঙ্গং লেকের কাছে গত সেপ্টেম্বর থেকে ব্রিজ তৈরি করছে চীন। দক্ষিণ তীর থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরত্বেই সেই ব্রিজ রয়েছে। প্রায় ৩১৫ মিটার লম্বা। এই সেতু পথেই অস্ত্রশস্ত্র, যুদ্ধট্যাঙ্ক নিয়ে যাওয়ার কাজ সারবে লাল ফৌজ। এখনই পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করছে চিনা বাহিনী।
ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণ প্যাঙ্গং থেকে সেনা ও সামরিক কাঠামো সরিয়ে নিয়েছে চীনের বাহিনী। অস্ত্রশস্ত্র ট্রাকে তুলে, তাঁবু গুটিয়ে তাদের ফিরে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু একেবারেই ফিরে গেছে চীনের সেনা, এমনটা কিন্তু নয়। সেনা সূত্র বলছে, ডিসএনগেজমেন্ট বা সেনা পিছনোর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে দেখা গেছে, লাল ফৌজ তাদের রুটগ বেসে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তার আগে থেকেই এই ঘাঁটি সাজিয়ে তোলার কাজ চলছিল। এখনকার উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, সেখানে ছোট ছোট ঘরের মতো কাঠামো তৈরি হয়েছে। ক্যাম্প খাটানো হয়েছে। অস্ত্র রাখার জায়গাও আছে। রাইফেল ডিভিশনও মোতায়েন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তি মাফিক কোনও দেশের সেনাই বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হতে পারে না। আঞ্চলিক সীমান্তগুলির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য চুক্তিবদ্ধ দুই দেশই। কিন্তু চীনের বাহিনী সে চুক্তি বারে বারেই লঙ্ঘন করেছে।