মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময়ই করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এখন নয়, গোড়া থেকেই। শুধু একা নিজে নন, অন্যকেও সতর্ক করেন সর্বদা। এমনকি পরামর্শও দেন কী করা উচিৎ আর কী করা উচিৎ নয়! এমন বহু দৃষ্টান্ত রেখেছেন তিনি। রাজ্যের সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মত নেতা মন্ত্রীদের তরফে এই ধরনের মহামারী মোকাবিলায় সচেতনতার এমন বার্তা অত্যন্ত জরুরি।
দিন দশেক আগের কথাই। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেদিন তিনি হাতে গ্লাভস পরেছিলেন। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর শেষ সাংবাদিক বৈঠকেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র। যা আগে দেখা যায়নি। এমনকি টিস্যুতে মুড়ে মাইক্রোফোন হাতে নেওয়ার ছবিও দেখা গেছে। সে নির্বাচনী প্রচার হোক, বা প্রশাসনিক বৈঠক। সতর্ক সবসময়।
শুধু তাই নয়, প্রতিটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বারবার করোনা নিয়ে সতর্ক করেছেন। দূরত্ব, মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের ওপর জোর দিতে বলেছেন প্রায় প্রতিটি সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই। নিজের ও পরিবারের মানুষের ওপর নজর রাখতে বলেছেন।
করোনা যখন প্রথম হানা দেয় তখন থেকেই তিনি সদা সতর্ক। মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে জোর দিতে বলেছেন সবসময়। এমনকি তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, সঙ্গে মাস্ক না থাকলে ছেলেরা রুমালই মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন আর মহিলারা শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। যা নিয়ে অনেকেই মজা করেছিলেন সেই সময়। কিন্তু আদতে দেখতে গেলে এটাও এক সতর্কতার নজির। একটাই বার্তা, নাক-মুখ ঢাকুন, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন, অযথা বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।
উদাহরণ হিসেবে আরও বলা যায়, লকডাউনের পর যখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন, আস্তে আস্তে খুলছে বাজার দোকান, তখন মমতাকে দেখা গেছে চক হাতে নিজেই রাস্তায় নেমে পড়েছেন। দাগ কেটে দূরত্ব বিধি বুঝিয়েছেন সবাইকে। এছাড়াও সবাইকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘লেবু, ডিম খান বেশি করে।’ তাঁর এই উপদেশ বা পরামর্শ শুনে কখনও মনে হয়নি যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী, মনে হয়েছে পরিবারের একজন!