এবার বাংলার প্রধান ৪০টি জেলা সড়কের ঢালাও সংস্কারে উদ্যোগী হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। আর এই সম্পূর্ণ কাজ আগামী ছ’মাসের মধ্যে সমাপ্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য। এর নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য দু’টি। প্রথমত, সাধারণ মানুষের যাত্রাপথ আরও মসৃণ করা। আর দ্বিতীয়ত, শিল্পক্ষেত্রের পরিকাঠামো মজবুত করার দিকে নজর দেওয়া। তাই কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যের কোষাগারের উপর চাপ বহুগুণ বাড়লেও পরিকাঠামো উন্নয়নে পিছপা হয়নি নবান্ন। এই খাতে ৪৭৪ কোটি টাকা খরচ হবে ধরেই শুরু হয়েছে রাস্তা সংস্কারের কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জেলা সড়ক সংস্কারের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু করে দিয়েছে নবান্ন। এই কাজে সাধারণ মানুষের সুবিধার পাশাপাশি উপকৃত হবে গ্রামীণ অর্থনীতিও। কাজ পাবেন বহু মানুষ। রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্রেই অন্তত একটি করে শিল্পতালুক গড়ার লক্ষ্যে এগচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মসৃণ ও মজবুত রাস্তা যার প্রথম এবং প্রধান প্রয়োজন। মালবাহী গাড়ির ওজন নেওয়া সত্ত্বেও যাতে জেলা সড়কগুলি দ্রুত বেহাল না হয়ে যায়, নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। আর সেই লক্ষ্যেই এগচ্ছে নবান্ন। শীর্ষ আধিকারিক সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা চালিয়ে ও জেলাশাসকদের থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে ৪০টি প্রধান জেলা সড়ককে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই সব সড়ক পূর্তদফতরের আওতাধীন এবং সংস্কারের কাজ চালাবে।
এপ্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, এই জেলা সড়কগুলি উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। ধাপে ধাপে বাকি সড়কের সংস্কারও হবে। বছর চারেক আগে জেলা পরিষদের বেশ কিছু রাস্তা আরও ভালো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পূর্তদপ্তরকে হস্তান্তরিত করা হয়েছিল। কারণ, পূর্তদপ্তরের কাজের পরিকাঠামো জেলা পরিষদের থেকে অনেকাংশে ভালো। চিহ্নিত ৪০টি জেলা সড়কের মধ্যে তেমন কিছু রাস্তাও রয়েছে। এই সব রাস্তার ঢালাও সংস্কার হবে মূলত নাবার্ডের রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (আরআইডিএফ) মাধ্যমে, যা কিছুদিন আগেই অনুমোদিত হয়েছে। জেলা সড়কের মাপ ভিন্ন হওয়ায় একসঙ্গে কাজ শেষ করা মুশকিল। তবে পূর্তদফতর সূত্রের খবর, আগামী বর্ষার মধ্যেই এই সবক’টি জেলা সড়কের সংস্কার সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পূর্তদফতরের এক আধিকারিক জানান, “এই চল্লিশটি জেলা সড়কের ঢালাও সংস্কারের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় আরও রাস্তা সংস্কারের কাজ খুব দ্রুত শেষ হতে চলেছে। কোথাও ১৫ ফুট চওড়া রাস্তা ২১ ফুট করা হচ্ছে। আবার কোথাও সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া হচ্ছে ৭.৫ থেকে ১১ মিটার। শীতে বেশিরভাগ কাজ সেরে রাখাটাই আমাদের লক্ষ্য। বর্ষার আগে কাজ শেষ করে ফেললে মানুষকে আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না।”