এবার চিংড়িঘাটা মোড়ের দুর্ঘটনা এড়ানোর নতুন পথের সন্ধান দিলেন আইআইটি খড়গপুরের বিশেষজ্ঞরা। ইএম বাইপাসের সঙ্গে সল্টলেক বাইপাসের সংযোগ গড়বে, এমন দুটি উড়ালপুল তৈরি করলেই চিংড়িঘাটা মোড়ের দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। এরই পাশাপাশি একটি ‘আন্ডার পাস’ তৈরি করলে, যানজট এবং দুর্ঘটনা দুই কমানো সম্ভব বলে আইআইটি’র বিশেষজ্ঞদের মত। চিংড়িঘাটা মোড় নিয়ে এমনই প্রস্তাব নগরোন্নয়ন দপ্তরকে দিয়েছে খড়গপুর আইআইটি’র বিশেষজ্ঞ কমিটি। ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা অংশকে ‘দুর্ঘটনা প্রবণ’ তকমা মুক্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ী আইআইটি খড়গপুরের মতামত চেয়েছিল রাজ্য সরকার। চলতি মাসের গোড়ায় সেই রিপোর্টই জমা দিয়েছেন আইআইটি’র বিশেষজ্ঞরা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বুধবার সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেন কলকাতা ও বিধাননগর কমিশনারেটের ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। এরই পাশাপাশি মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজে এখানে পিলার বসানোর কাজও শীঘ্রই শুরু হবে। সেই কাজ শুরু হলে, গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ কীভাবে হবে, এদিন তাও খতিয়ে দেখেন পুলিস কর্তারা।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশের তরফে এদিনই চিংড়িঘাটা মোড় সংলগ্ন কয়েকটি রাস্তায় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিংড়িঘাটা মোড়ে কেন এত দুর্ঘটনা হচ্ছে? উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে মমতার অসন্তোষ প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসে গোটা প্রশাসন। আর যেন দুর্ঘটনা না ঘটে, মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া নিদানের পর কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তরফে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য একটি সমীক্ষা করা হয়। সেই সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল খড়গপুর আইআইটিকে। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী, ইএম বাইপাস থেকে সল্টলেক বাইপাসমুখী বর্তমান যে উড়ালপুল রয়েছে, সেটি সরিয়ে ফেলতে হবে। তার বদলে নতুন জায়গায় নিক্কোপার্কমুখী এবং সল্টলেক বাইপাস থেকে ইএম বাইপাসমুখী পৃথক উড়ালপুল তৈরি করতে হবে। এই দুই ফ্লাইওভার চালু হলে, সল্টলেক এবং সেক্টর ফাইভ থেকে বাইপাসমুখী যানবাহনের চলাচল সুগম হবে। কমবে যানজটও।
সূত্র অনুযায়ী, আইআইটির রিপোর্টে ‘শর্ট টার্ম’ ও ‘লং টার্ম’- এই দু’ধরণের সমাধানের কথা বলা হয়েছে। শর্ট টার্ম ব্যবস্থা হিসেবে চিংড়িঘাটা সংলগ্ন এলাকার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং মানুষের পারাপারের ঠিকমতো পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে, এয়ারপোর্ট-গড়িয়া সংযুক্তিকরণের জন্য বাইপাসের উপর পিলার তৈরির কাজও শুরু হবে। সেটাকে মাথায় রেখেই কীভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভালো করা যায়, তা রিপোর্টে জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর। অন্যদিকে, লং-টার্ম সমাধান হিসেবে চিংড়িঘাটা ক্রসিং পারাপারের জন্য সাবওয়ে বা আন্ডার পাস তৈরি করার কথা জানিয়েছে আইআইটি খড়গপুর। চিংড়িঘাটায় ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। এদিনের পরিদর্শনের পরে কলকাতা পুলিসের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) পান্ডে সন্তোষ জানিয়েছেন, ওই রাস্তায় বিশেষ কোনও যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। তবে ক্যানাল সাউথ রোড একমুখী করে দেওয়া হচ্ছে। চাউলপট্টি রোডে চলাচল করতে পারবে শুধুমাত্র পূর্বমুখী যান।