ঢাক-ঢোল পিটিয়ে রথযাত্রার প্রচার করেছিল বিজেপি। হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত যাত্রা স্থগিত। গেরুয়া শিবিরের সকল আয়োজন জলে গেছে। আর মুখ লুকিয়েছে তাদের রাজনীতির রথ। শিলিগুড়ির কাছে মাটিগাড়ায় এক হোটেলের সামনে এখন ত্রিপল চাপা দিয়ে দাঁড় করানো আছে বিজেপির বিলাসবহুল রথ।
এই শীততাপনিয়ন্ত্রিত ফাইভস্টার রথের দেখভালে ২৪ ঘণ্টার জন্য মোতায়েন আছেন ৬ জন কর্মী। কিন্তু রথে ত্রিপল চাপা পড়ল কেন? বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘রথযাত্রা কিংবা রথ নিয়ে আমরা কোন মন্তব্য করতে পারব না। যা বলার কেন্দ্রীয় নেতারা বলবেন।’ আর বাস কর্মীরা বলছেন, ‘শিবপ্রকাশজির (বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা) সঙ্গে কথা বলুন।’ এই রথ অর্থাৎ বাসের সঙ্গেই ঘুরছেন বাসের মালিকও। তাঁর নাম অক্ষয় ত্রিপাঠী। তাঁর কথায়, ‘বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে বাস ত্রিপল দিয়ে ঢাকা হয়েছে।’ আর বিজেপি কর্মীদের কথায়, ধূপগুড়িতে পুলিশের উপর দলীয় কর্মীদের হামলার পর মাটিগাড়া থানা থেকে পুলিশ বারবার বাসের খোঁজ নিতে শুরু করায় আর ঝুঁকি নেননি কেন্দ্রীয় নেতারা। তড়িঘড়ি ‘রথ’-এর উপর ত্রিপল চাপা দিয়েছেন তাঁরা।
ছবি তোলা তো দূরের কথা, সংবাদমাধ্যমকেও দেখতে দেওয়া হচ্ছে না বিজেপির এই রথ। কেন এই কড়াকড়ি? বাসকর্মীদের যুক্তি, প্রচারের সময়ে বাসে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ওঠেন। তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ভিতরের ছবি তুলতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু বাসটি এভাবে কতদিন দাঁড়িয়ে থাকবে মাটিগাড়ায়? এর কোনও স্পষ্ট জবাব মেলেনি। বাসচালকের কথায়, ‘বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেমন বলবেন সেভাবেই সব ঠিক হবে।’ বাসের মালিক অক্ষয় ত্রিপাঠীরও বক্তব্য, ‘নেতাদের নির্দেশ না-পাওয়া পর্যন্ত বাস এমন ভাবেই রাখা হবে।’ শুধু বাংলায় রথযাত্রার জন্য নয়, তিনি জানালেন, গোটা দেশে বিজেপির যে কোন নিবার্চনী কর্মসূচিতেও এই বিলাসবহুল বাসটি ব্যবহার করা হয়। উত্তরপ্রদেশের গত নির্বাচনে এই বাসে চড়ে বিজেপি নেতারা রাজ্য চষেছেন। রথযাত্রার উদ্দেশ্যে তাই সেই বাসটাকেই রঙচঙ করে আনা হয়েছিল বাংলায়। হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত সেসব স্থগিত। তাই বিজেপির রথও মুখ ঢেকেছে ত্রিপলে।