বাঙালির শীতের খাবারের তালিকায় কেক-পেস্ট্রি যতই থাক, খেজুর গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি। খোলা বাজারে যে গুড় পাওয়া যায়, তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভেজাল থাকে। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনার ফসল খাঁটি নলেন গুড়ের টিউবের চাহিদা বাজারে বেড়েছে। সরকারি বিভিন্ন স্টল, যেমন বিশ্ববাংলার কাউন্টারে এই টিউব পাওয়া যায়। এবছর নলেন গুড়ের টিউবের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমন ঠান্ডা পড়ায় রসের উৎপাদনও বেড়েছে। সামনেই পৌষ সংক্রান্তি বাঙালির পিঠেপুলির উৎসবের মাস। পাটিসাপটা কিংবা সিদ্ধ পিঠে, কিংবা গরমাগরম রুটি বা পরটা দিয়ে ঝোলা নলেন গুড়।পিঠেপুলি হোক বা পায়েস অথবা নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লার অতুলনীয়। এবছর ঠান্ডা একটু বেশিই। শীত যত বাড়বে, ততই খেজুর রসের চাহিদা বাড়বে।
উল্লেখ্য, মাজদিয়ার নলেন গুড়ের নাম রাজ্য তো বটেই, ভিনরাজ্যেও সমান জনপ্রিয়। কাজেই বাংলার খাদি গ্রামোদ্যোগ ও শিল্প পর্ষদের অন্তর্ভুক্ত মাজদিয়ার ভাজনঘাটের শ্রীকৃষ্ণ নলেন গুড় উৎপাদক সংস্থায় তাই এখন ব্যস্ততা। সকাল হতেই শিউলিরা হাজির হচ্ছেন রস নিয়ে। সেখানে রস বিক্রি করে আবার চলে যাচ্ছেন গাছ কেটে হাঁড়ি বসাতে। শ্রীকৃষ্ণ নলেন গুড় উৎপাদক সমিতি রাজ্যে একমাত্র নলেন গুড়ের টিউব তৈরির কারখানা। শিউলিদের কাছ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খেজুর রস কিনে নেয়। সমিতির কাছ থেকে শিউলিরা ন্যায্য দাম পান। এরপর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সমস্ত রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপরে টিউবে ভরে খাদি গ্রামোদ্যোগের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়। শুধু এ রাজ্য নয়, ভিনরাজ্য এমনকী বিদেশেও রফতানি করা হয়। ১০০ গ্রাম নলেন গুড়ের টিউবের দাম ৬০ টাকা, ১৫০ গ্রাম টিউবের দাম ৮০ টাকা। গতবছর করোনার কারণে গুড়ের চাহিদা ছিল না। ফলে খেজুর রসের চাহিদা না থাকায় শিউলিরা আর্থিক দিক থেকে মার খেয়েছিলেন। তবে এবার প্রথম থেকেই চাহিদা অনেক বেশি। তাই তাঁরাও যারপরনাই খুশি।