মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার সময় রাজ্যপাল ছিলেন দেশের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা এমকে নারায়ণন। তিনি চলে যাওয়ার পর কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রথমে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, তারপর বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে রাজ্যপাল করে পাঠায়। দু’জনের সঙ্গেই নবান্নের বিরোধের অন্যতম জায়গা হল শিক্ষাঙ্গন।
রাজ্যের বিশ্ব বিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে সরাতে চায় নবান্ন। শুক্রবারই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পরে বিভিন্ন মহলের পরামর্শে সেই অবস্থান থেকে খানিক সরে কোনও শিক্ষাবিদকেও আচার্যের পদে বসানোর ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে টুইটে আভাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। পছন্দের আচার্য পেয়ে গেলে আইন শুধরে শিক্ষাবিদকে বসানোর বিষয়ে অগ্রসর হবে নবান্ন। সে ক্ষেত্রে বাংলাই হবে প্রথম রাজ্য যেখানে রাজ্যপালের হাত থেকে আচার্য পদমর্যাদা কেড়ে নেওয়া হবে।
এরপরই নবান্ন সিদ্ধান্ত নেয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই আচার্য হিসাবে সাময়িক দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেই ভাবনার কথা শিক্ষামন্ত্রী জানানোর পর শিক্ষামহল থেকে আপত্তি ওঠে। শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, ওই পদে কোনও রাজনীতিবিদ কিংবা প্রশাসককে না বসিয়ে শিক্ষাবিদকে বসানো হোক।
যেমন, আগে ঠিক ছিল সার্চ কমিটির বাছাই করা তিনটি নামের থেকে রাজ্যপাল একজনকে বেছে নিতে পারতেন উপাচার্য হিসাবে। কিন্তু বাংলায় সেই ক্ষমতাও এখন সরকারের কুক্ষিগত। রাজ্য সরকার নির্বাচিত প্রার্থীকেই আচার্য-রাজ্যপাল আনুষ্ঠানিক নিয়োগের সম্মতি দিতে বাধ্য।
বিধানসভা নির্বাচনের পর একগুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগ, মেয়াদ বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে আচার্যের সম্মতি ছাড়াই। ২০১৭ সালের আইন – বিধির জোরেই গত শুক্রবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে চলতি সেমিস্টারের পরীক্ষা অনলাইনেই নিতে বলে।
রাজ্যপালদের সাংবিধানির দায়িত্বের পাশাপাশি তাঁরা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আচার্য হিসাবে রাজ্যপালদের হাতে কিছু ক্ষমতাও দেওয়া আছে সংশ্লিষ্ট আইনে।