স্বাধীনতা দিবসের ৭৫তম বর্ষ থেকে ঋষি অরবিন্দের দেড়শো বছর উদযাপন নিয়েও ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে। দেশজুড়ে স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তুতি বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয়নি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারই পাল্টা দিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ঋষি অরবিন্দের জন্মবার্ষিকী নিয়ে বৈঠকে তিনি অংশ নেবেন না। রাজ্য সরকার বাংলার স্বাধীনতার ঐতিহ্যকে তুলে ধরেই বছরভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তা পালন করবে। দেশের কাছে তুলে ধরা হবে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদানের কথা।
রাজ্যজুড়ে স্বাধীনতা দিবস পালনের প্রস্তুতি বৈঠকে এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে নবান্নে তিনি বলেন, ‘গতকাল যেটা করেছে তা নিয়ে আমাদের বলার সুযোগ হয়নি। পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বের থেকে কাউকে বলতে দেওয়া হয়নি। আমি ৩ ঘণ্টা ধরে মিটিংয়ে ছিলাম। বাংলাকে বাদ দিয়ে অন্যান্যরা বলেছেন, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলা হচ্ছে স্বাধীনতার পীঠস্থান এবং জন্মভূমি। স্বাধীনতার মাতৃভূমি। ন্যাশনাল অ্যানথেম থেকে ন্যাশনাল সং সবটাই বাংলার। নবজাগরণ থেকে একেবারে স্বাধীনতা সংগ্রাম সবটাই। আন্দামান সেলুলার জেলে গেলে দেখবেন সব থেকে বেশি নাম আছে বাঙালিদের। যাঁরা সেই সময় আন্দোলন করেছিলেন। যাই হোক ওঁদের কাজ ওঁরা করবেন আমাদের কাজ আমরা করব’। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বক্তব্য, ‘আমার সঙ্গে এত বেশি রাজনীতি করা উচিত নয়’।
কেন্দ্রকে কার্যত বাদ দিয়েই বছরভর রাজ্যে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ঘোষণাও এদিন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, কেন্দ্র এই বাবদ কোনও অর্থও দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এ নিয়ে কোনও পয়সা কড়ি আমাদের দেওয়া হয়নি। যে কোনও কিছু করতে গেলে একটা বাজেট লাগে। কিন্তু সেন্ট্রাল থেকে কোনও বাজেট আমাদের দেওয়া হয়নি। যা কিছু করতে হবে আমাদেরকেই করতে হবে। তবু আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেই যতটুকু পারা যায় তা করা হবে’।
বৈঠকেই তিনি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেওয়া দেওয়ার, যে তিনি পূর্ব নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত। তাই তাঁর পক্ষে বৈঠকে থাকা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘কালকে আমাকে বলতে দেওয়া হয়নি। আর ঋষি অরবিন্দ নিয়ে আমরা অনেক অনুষ্ঠান নিয়েছি। কেন্দ্রকে জানিয়ে দিও, ইতিমধ্যেই আমরা অনুষ্ঠান শুরু করে দিয়েছি’।