৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ও অফিস। আজ শনিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এই ঠিকানাতেই চিঠি পাঠাল সিবিআই। এই বাড়ির অফিসে ৪০ বছর ধরে সচিবের কাজ করা মানিক মজুমদারকে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হতে বলে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
একই চিঠি গেছে তৃণমূল সাংসদ সুব্রত বক্সী ও ডেরেক ও’ব্রায়েনের কাছেও। আগামী ১০ থেকে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
গোটা বিষয়টিকে যদিও ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসাবেই দেখছে তৃণমূল। আইনি লড়াইয়ে বিজেপির রথযাত্রা ভেস্তে যাওয়ার পরই চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এভাবে ‘চাপ’-এর রাজনীতির পথে হাঁটছে বলেই তাদের দাবি। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি এই ধরণের পদক্ষেপ নিয়ে বশ্যতা স্বীকারের জন্য চাপ দিতে চাইছে। কিন্তু সেই চাপের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল নতি স্বীকার করবে না বলেই জানিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে যাঁদের নামে সিবিআইয়ের চিঠি এসেছে তাঁরা কেউই হাজিরা দিতে যাবেন না বলে জানা গেছে। তৃণমূলের দাবি ‘ধমক-চমক’ এর রাজনীতি করছে বিজেপি। তবে বাংলার মাটি পদ্ম শিবির চেনে না তাই ভয় দেখিয়ে বিজেপির লাভের লাভ হবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কিছুতেই বাংলাকে কবজা করতে পারছে না গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিদিন বিস্তৃত হচ্ছে। আসামের পঞ্চায়েত ভোটেও এবার প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। রাজস্থান, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ আরও ৯ রাজ্যে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তারওপর বিজেপি বিরোধী জোটের মধ্যমণিও তিনি। সর্বভারতীয় স্তরেও তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে মমতা এখন বিজেপি নেতৃত্বের চরম মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছেন। তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত পথের কাঁটা সরাতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআইকে দিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে বিজেপি।
এই মুহূর্তে সিবিআইয়ের অন্দরে চরম ডামাডোল চলছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটানোর জন্য বহু ক্ষেত্রেই সিবিআইকে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবহার করে বলে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন খোদ সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তারাই। সেই মামলা এখনও চলছে দেশের শীর্ষ আদালতে। আর তার মধ্যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআইয়ের চিঠি খোদ সিবিআই অফিসারদের অভিযোগকেই মান্যতা দিল।
পাশাপাশি ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে বাংলার নেত্রীর মুখ বন্ধ করতেই গেরুয়া শিবির এমন ঘৃণ্য কাজ করল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।