বুধবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির আগ্রাসনের সামনে কার্যত উড়ে গেল লিডস ইউনাইটেড। ৭-০ ব্যবধানে জিতলেন কেভিন ডে ব্রুইনরা। সাত গোলের দু’টিই করলেন বেলজিয়ামের তারকা। যার একটি ২০ মিটার দূর থেকে মারা অসামান্য শটে করা। বিগত ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে ম্যান সিটিতে যোগ দেন ব্রুইন। তখন থেকে মোট ২০টি গোল করেছেন পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে মারা শটে। যে নজির কারও নেই। ইংরেজ ফুটবলবোদ্ধারা বলে দিচ্ছেন, এতিহাদের ক্লাবকে তিনি পরিচালনা করেন সঙ্গীতস্রষ্টার মতো। এ’মরসুমে অসুস্থতা ভুগিয়েছে তাঁকে। তবু ফিরে এসে সেরা খেলা উপহার দেওয়াই যেন তাঁর অভ্যাস। মঙ্গলবারও ঠিক তেমনই হল। ডিসেম্বরের শুরুতেই চেলসি, লিভারপুলকে পিছনে ফেলে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে উঠে এসেছে পেপ গুয়ার্দিওলার ক্লাব। যদিও ব্রুইনকে এ’মরসুমে সে ভাবে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তিনি সেরা ছন্দে থাকলে পরিণতি কী হতে পারে, তা ভালমতো টের পেলেন লিডসের আর্জেন্টিনীয় ম্যানেজার মার্সেলো বিয়েলসা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রুইন মাঝমাঠের ফুটবলার। সব ম্যাচে গোল করবেন এমন কথা নেই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, সতীর্থদের দিয়ে ক’টা গোল করালেন। গত মরসুমে করিয়েছিলেন ১২টি। তার আগের বার ২০টি গোল করিয়ে নজির স্পর্শ করেন। লিডস ম্যাচে এ বার নিজেই জোড়া গোল করে ফেললেন। এমনিতে বিপক্ষ গোলে শট মেরেছেন ন’টি। তাঁর চারটি পাসে গোলের ছক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ দক্ষতায় অন্যদের বল সরবরাহ করেছেন সারাক্ষণ ধরে। ব্রুইন দু’টি গোল করেন ৩২ ও ৬২ মিনিটে। ফিল ফডেনের সৌজন্যে ১-০ হয় আট মিনিটে। ম্যান সিটির অন্য গোলদাতারা জ্যাক গ্রিলিশ (১৩ মিনিট), রিয়াদ মাহরেজ (৪৯ মিনিট), জন স্টোনস (৭৪ মিনিট) ও নাথান অ্যাকে (৭৮ মিনিট)। ম্যাচে ম্যান সিটি বিপক্ষ গোলে শট মেরেছে ৩১ বার। ৭০ শতাংশ বল গুয়ার্দিওলার ফুটবলারদের পায়ে ঘুরেছে। ব্রুইনরা নির্ভুল পাস খেলেন ৯১ শতাংশ। মাত্র একবার অফসাইডের ভুল হয়।
আপাতত, লিডসকে উড়িয়ে পয়েন্ট টেবলে শীর্ষে থাকা ম্যান সিটি (১৭ ম্যাচে ৪১) দ্বিতীয় লিভারপুলের থেকে চার পয়েন্টে এগিয়ে থাকল। মহম্মদ সালাহদের সংগ্রহ ১৬ ম্যাচে ৩৭। বৃহস্পতিবার লিভারপুল অ্যানফিল্ডে খেলবে নিউক্যাসলের সঙ্গে। চেলসি মুখোমুখি হবে এভার্টনের। ৬টি করে ম্যাচ খেলে টেবলে তিন থেকে সাতে আছে চেলসি (৩৬), ওয়েস্ট হ্যাম (২৮), ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড (২৭), আর্সেনাল (২৬) ও টটেনহ্যাম (২৫)। এখন দেখার বিষয় এটাই, এ’রসুমে ব্রুইনের উপর থেকে অসুস্থতার অভিশাপ কাটল কি না। ব্রুইন জানিয়েছেন, “এই মরসুমে আমার উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। যার অনেক কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। একটা রাস্তাই খোলা ছিল। কঠোর পরিশ্রম করে দ্রুত মাঠে ফেরা। সেটাই করেছি।” ব্রুইন অবশ্য জানেন, সামনে কঠিন সূচী। এরপর তাঁদের প্রতিপক্ষ লেস্টার সিটি, আর্সেনাল ও চেলসি।