হাতে আর বেশিদিন বাকি নেই। আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পুরভোট। কিন্তু এখনও সামাজিক মাধ্যম থেকে সংবাদ মাধ্যমে নেই সেই অর্থে ভোটের উত্তাপ। নেই পাড়ায় পাড়ায় দেওয়াল লেখা নিয়ে রেষারেষি, অলিগলিতে দু-হাত অন্তর পথসভা বা মাইকে কান ফাটানো চিৎকার। এ হেন দৃশ্য দেখে অনেকেই বলছেন, কলকাতায় এমন নিস্তরঙ্গ পুরভোট দেখিনি। আসলে সদ্য বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর শাসক দলের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে চলাটাই বিরোধী শিবিরের প্রধান কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা পাল্টা চ্যালেঞ্জে যাচ্ছে না। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের অপ্রত্যাশীত বিপুল জয়ের ফলে গোটা বিরোধী শিবিরকেই রাজনৈতিক হতাশা গ্রাস করেছে। তারা কর্মী-সমর্থকদের পথে নামাতে পারছে না। অবস্থা এমনই যে যেখানে পুরভোটের প্রচারের সময়সীমা ফুরোতে আর দু’দিন বাকি, সেখানে বুধবার পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতারা শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের অর্ধেক ওয়ার্ডেও প্রচার করতে পারেননি। অথচ, বিজেপিই রাজ্যের প্রধান এবং বিধানসভার একমাত্র বিরোধী দল।
২০১৫ সালে বিজেপি যখন এ রাজ্যে এক জন বিধায়ক এবং দু’জন সাংসদের দল, তখন কলকাতা পুরভোটে তাদের সক্রিয়তা এবং ঝাঁজ অনেক বেশি ছিল বলে মনে করছেন দলের পুরনো নেতাদের অনেকেই। সে বার কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিজেপি দফতরে কর্মীদের বিরাট ভিড় ছিল। কিন্তু এবার কলকাতা পুরভোট পর্বে অবশ্য বিজেপি দফতরে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের ভিড় চোখে পড়েনি। তারা কলকাতার প্রার্থীও ঘোষণা করেছে একেবারে শেষ লগ্নে। অন্যদিকে, তাদের প্রচারেও বিশেষ হইচই নেই। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মিলে পর্যন্ত কলকাতার অর্ধেক ওয়ার্ডেও প্রচারসভা করেননি। বিজেপি জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও গিরিরাজ সিংহ এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রামকৃপাল যাদব, সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর কলকাতার ভোটে তারকা প্রচারক হিসাবে আসবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের দেখা মেলেনি। রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, কলকাতায় দলের সংগঠন এমনিতেউ দুর্বল। তার ওপরে বিধানসভা ভোট ও সাতটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দল পর্যুদস্ত হওয়ায় পাঁচ জন বিধায়ক-সহ অনেকে তৃণমূলে চলে যাওয়ায় কর্মীদের মনোবলে ধাক্কা লেগেছে।