শুধু বাংলারই নন। গোয়ারও মেয়ে তিনি। সোমবার সে রাজ্যে তৃণমূলের জনসভায় এ কথাই বোঝাতে চাইলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়ার সঙ্গে তাঁর একাত্মতা বোঝাতে জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের ভাষা জানি।” এর পরেই তাঁর মন্তব্য, “আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে এখানে আসিনি।” গোয়ায় তৃণমূলের রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়ার পর থেকেই শাসক বিজেপি এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ধারাবাহিক ভাবে নিশানা করছে জোড়াফুল শিবিরকে। সেই সমালোচনা মূলত দ্বিমুখী। বিজেপির দাবি, তৃণমূল গোয়ায় বহিরাগত। অন্য দিকে, কংগ্রেসের অভিযোগ, গোয়ায় বিরোধী ভোট বিভাজন করে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছে মমতার দল। সোমবার বেনোলিমের জনসভায় দু’টি অভিযোগেরই জবাব দিয়েছেন মমতা। গোয়ায় তিনি বহিরাগত নন বোঝাতে তুলেছেন ভাষার প্রসঙ্গ। পাশাপাশি, স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “আমরা ভোট ভাগ করতে আসিনি।” বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেসের দায়বদ্ধতা নিয়ে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “আমরা লড়লে পুরোপুরি লড়ি। অর্ধেক লড়াইয়ে বিশ্বাস করি না।”
এদিন সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তৃণমূলনেত্রী সরাসরি প্রশ্ন করেন, “আপনারা কি মনে করেন, গোয়ায় আমরা জিতব?” জনতার থেকে ইতিবাচক উত্তর পেয়ে এর পর তাঁর মন্তব্য, “তবে বাংলার মতো গোয়াতেও খেলা হবে।” ইতিমধ্যেই গোয়ার প্রাক্তন শাসকদল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির সঙ্গে তৃণমূলের জোট হয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সঙ্গেও সমঝোতা হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। মমতা সোমবার বলেন, “আমরা ভোটে লড়ব। কেউ চাইলে আমাদের সঙ্গে আসতে পারেন।” গত অক্টোবরে গোয়ায় এসে সে রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। তাঁর দলের নামের নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, “টিএমসি মানে হল টেম্পল-মস্ক-চার্চ (মন্দির-মসজিদ-গির্জা)।” সোমবার তাঁর মুখে ছিল, রাজ্যের উন্নয়নের প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, “এ রাজ্যে সরকার গড়লে আমরা ছ’মাসের মধ্যে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করব। আমি নিজে এসে দেখব, বাংলার মতো গোয়ার উন্নয়ন যাতে নিশ্চিত হয়।” ওই সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর বিভাজনের রাজনীতি করাই বিজেপির রাজনীতি। তৃণমূলই বিজেপির আসল বিকল্প।”