প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে দেশকে করোনামুক্ত করতে রেকর্ড পরিমাণ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণও হয়েছিল। গত ১৭ সেপ্টেম্বর করোনা টিকা পেয়েছিলেন দেশের ২ কোটি ৫০ লাখ ১৬৬ জন নাগরিক, যা বিশ্বরেকর্ড তৈরি করেছিল। গর্বের মুহূর্ত ছিল দেশের জন্যও। কিন্তু সেই বিশ্বরেকর্ডে কি কিছুটা হলেও ‘জল’ মিশে গিয়েছিল? যে বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছিল ওই দিন, সেই তালিকায় কি ছিল মৃত বা টিকা না পাওয়া ব্যক্তির নামও? তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদে করা প্রশ্নের জবাবে এবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জবাব দিল, ‘ভুল’ হয়েছিল তো বটেই।
সংসদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে টিকাদান অভিযানে কি শংসাপত্রগুলি ইতিমধ্যে মৃত ব্যক্তিদের নামে বা সেইসব নাগরিকদের নামে ইস্যু করা হয়েছিল, যারা সেদিন টিকাই পাননি? এই প্রশ্নের জবাবেই লিখিত ভাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক তৃণমূল সাংসদকে জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে কিছু ‘এরর’ রয়ে গিয়েছে। ডেটা আপডেটশন এন্ট্রির ক্ষেত্রে কিছু ভুলের কারণেই এই সমস্যা হয়েছে। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট, যে বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টির দাবি করেছিল কেন্দ্র, তার মধ্যে ‘ভুল’ রয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, ওই সময় পর্যন্ত দেশে টিকা পেয়েছেন ২ কোটি ২৫ লাখ দেশবাসী। তিনি একটি টুইটে লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে দেশ এক কোটি টিকাকরণের লক্ষ্য ইতিমধ্যেই পূর্ণ হয়েছে। আমরা দ্রুত টিকা দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমি নিশ্চিত যে আজ আমরা দেশে টিকাকরণের নতুন রেকর্ড তৈরি করব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তা জন্মদিনে উপহার হিসাবে দেব।’ ওইদিন টিকা দান নিয়ে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে আড়াই কোটি টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। এখনও পর্যন্ত চলতি বছর জুন মাসে চীন একদিনে ২ কোটি ৪৭ লাখ টিকা দিয়েছিল, যা একদিনে রেকর্ড টিকাদান ছিল। সেই রেকর্ড মোদীর জন্মদিনে ভেঙে দেয় ভারত। কিন্তু সেই বিশ্বরেকর্ড নিয়েই এবার প্রশ্ন উঠে গেল।