একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই ভাঙন অব্যাহত গেরুয়া শিবিরে। দিকে দিকে দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করছেন একের পর এক নেতা কর্মী। এবার সেই পথ ধরেই তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন হাওড়া সদরের বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা। আজ বৃহস্পতিবার ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নেবেন তিনি। গত মাসেই তাঁকে বহিষ্কার করেছিল দল। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলে শাস্তির মুখে পড়েছিলেন তিনি। এদিন শরত্ সদনে দিদির দলে যোগ দিচ্ছেন সুরজিৎ।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছিলেন সুরজিৎ সাহা। তিনি শুভেন্দুর সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, উনি তো ৬ মাস আগে বিজেপিতে এসেছেন। ওঁকে নারদায় টাকা হাতে নিতে দেখা গিয়েছে। বিজেপির কোনও নেতাকে সেখানে টাকা নিতে দেখা যায়নি। ওঁকে প্রমাণ করতে হবে, উনি কত বড় সৎ। এই মন্তব্যের পরেই সুরজিৎ সাহাকে বহিষ্কার করে বিজেপি। ফের প্রকাশ্যে আসে গেরুয়া শিবিরের কোন্দল।
উল্লেখ্য, মাস দেড়েক আগে যখন পুরভোটের সাংগঠনিক কাজকর্ম বিজেপি শুরু করেছিল, তখন হাওড়া কর্পোরেশনের নির্বাচনী কমিটির মাথায় রাখা হয়েছিল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে। তাঁকে সুরজিৎ সাহা মানতে চাননি। তা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। সুরজিৎ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি দালালকে মানতে চান না। সংবাদমাধ্যমেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, এতেই অসন্তুষ্ট হন শুভেন্দু। তিনি দলের অভ্যন্তরীন মিটিংয়ে তা নিয়ে সমালোচনাও করেন।
সেই খবর কানে আসতেই ফের বিস্ফোরক হন সুরজিৎ। বলেন, ওই মিটিংয়ে শুভেন্দু বলেছেন, হাওড়ার বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রাজ্যের এক মন্ত্রীর আঁতাত রয়েছে। হাওড়ার মন্ত্রী বলতে তখন ছিলেন অরূপ রায়। সুরজিৎ বলেছিলেন, শুভেন্দুকে প্রমাণ করতে হবে হাওড়ার নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ আছে। তা না হলে ওঁকে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। এরপরেই দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয় সুরজিৎ সাহাকে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর আস্থা রেখে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তিনি।