এবারের দিল্লী সফরে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই নতুন করে তৃণমূল ও কংগ্রেসের দূরত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এরই মধ্যে এবার সংসদীয় দলকে কংগ্রেসের ‘লেজুড়’ হয়ে থাকার আর কোনও প্রশ্নই নেই বলে বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দুপুরে দিল্লীতে সংসদীয় দলের সঙ্গে চলতি অধিবেশনের প্রথম বৈঠকটি করেন অভিষেক। সেখানে আগামী দিনে সংসদের ভিতরে ও বাইরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়ে দিশা দেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের বক্তব্য, যে বিষয়গুলিতে সব দল একমত, সেগুলিতে অবশ্যই কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে সুষ্ঠু সমন্বয় করা হবে। রাজ্যসভায় ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার ঘটনা নিয়ে সেই সমন্বয় হচ্ছেও গান্ধী মূর্তির সামনে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে কংগ্রেসের ‘লেজুড়’ হয়ে থাকার দিন শেষ। তাঁর বক্তব্য, বাংলায় বিজেপিকে বিপুল ভাবে পরাস্ত করার পর, কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
বৈঠকে নিজেদের বক্তব্য জানান তৃণমূলের রাজ্যসভা এবং লোকসভার নেতারা, মুখ্য সচেতক, প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় এবং সুব্রত বক্সী। পরে রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে একই কামরায় সফর করার দিন শেষ। সেটা আর হবে না। এ বার যে যার কামরায় যাত্রা করছে। তবে সবার গন্তব্যই এক— বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করা।’ তৃণমূল সূত্রে এ কথাও জানানো হয়েছে, চলতি অধিবেশনে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বা কংগ্রেসের অন্য কোনও শীর্ষ নেতা তাঁর বা তাঁদের কক্ষে বিরোধীদের বৈঠক ডাকলে সেখানে যাবেন না তৃণমূলের কোনও সাংসদ। অন্যদিকে, লোকসভায় নাগাল্যান্ড কাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেস, বাম, এসপি, এনসি-র সদস্যরা প্রতীকী কক্ষত্যাগ করলেও একমাত্র তৃণমূল কক্ষত্যাগ করেনি। এ নিয়ে লোকসভার তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অন্য দলের কর্মসূচীতে থাকলেও, আমাদের কক্ষত্যাগ করার দলীয় পরিকল্পনা ছিল না। বরং আমরা নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে অমিত শাহকে প্রশ্ন করেছি, আপনারা নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়টিতে আলোকপাত করুন।’
