তুঙ্গে বিতর্ক। সংসদে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ ঘিরে চরমে পৌঁছল টানাপোড়েন। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন লটারি করে হাতে গোনা কয়েক জন সাংবাদিককে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে এমনই। যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিল্লির প্রেস ক্লাব থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত মিছিল করলেন সাংবাদিকরা। কোভিড পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে গত বছর থেকেই সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের প্রবেশে এই বিধিনিষেধ চালু করেছে কেন্দ্র। ওই নিয়ম এখনও বহাল রয়েছে। শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীনও লটারিতে লোকসভায় সর্বাধিক ৬০ সাংবাদিক আর রাজ্যসভায় সর্বাধিক ৩২ জন সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সরকার-পরিচালিত এবং কিছু নির্বাচিত সংবাদমাধ্যম ও সংবাদ সংস্থার জন্য লোকসভায় ১০টি ও রাজ্যসভায় ১১টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।
ফলত বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা সংসদের উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ এবং সেন্ট্রাল হলে ঢুকতে পারছেন না বলেই অভিযোগ তুলেছে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া (পিসিআই)। সোমবার পিসিআই-এর তরফে একটি টুইটে লেখা হয়, “আজ শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন। এ বারও প্রেস গ্যালারিতে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ে এটি পাঁচ নম্বর অধিবেশন-পর্ব। আমাদের বলা হয়েছিল, ঢুকতে দেওয়া হবে। কিন্তু শেষমেশ তা হল না। এই নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৭শে নভেম্বর সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছিলেন সাংবাদিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, দেশ জুড়ে মল, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল খুলে গিয়েছে এখন। এই পরিস্থিতিতে সংসদে সাংবাদিকদের প্রবেশে এই বিধিনিষেধের কোনও অর্থই নেই। পিসিআই-র পক্ষ থেকে বলা হয়, “সাংবাদিকদের সংসদ চত্বরে প্রবেশে বাধা আদতে সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। ভারতের মতো সংসদীয় গণতন্ত্রে এটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা।”
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। সাংবাদিকদের দাবির সমর্থনে প্রেস বিবৃতি জারি করেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “যে সব সংবাদমাধ্যম সরকারের পক্ষে কথা বলে, তারা তো দিব্যি অনুমতি পাচ্ছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, খবর সেন্সর করতে চাইছে সরকার। সংসদের দুই কক্ষের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন, এই নিয়ম পুনর্বিবেচনা করা হোক।” সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের প্রবেশে অনুমতি চেয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীও।