মুম্বইতে গিয়ে সফরের দ্বিতীয় দিনে নাগরিক সমাজের বিশিষ্টদের সঙ্গে বসে সাংবাদিক বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ফের একবার বিজেপিমুক্ত ভারতের ডাক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। বৈঠকে উপস্থিত সকলের সামনেই এদিন প্রথম শাহরুখ খানকে নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। মুম্বইয়ের প্রমোদতরীতে মাদক উদ্ধারের মামলায় প্রায় এক মাস শাহরুখের বড় ছেলে আরিয়ান খান জেলে ছিলেন। সেই প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করেই মমতা এদিন পাশে দাঁড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহরুখের। মমতার দাবি, ‘বিজেপি অগণতান্ত্রিক ও পেশিশক্তিনির্ভর দল, একজোট হয়ে এই দেশকে বিজেপিমুক্ত করতে হবে।’
বলিউডের তারকা অভিনেতা শাহরুখের সঙ্গে বরাবরই ভালো সম্পর্ক মমতার। এদিনের বৈঠকে মহেশ ভাটের ক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘বিজেপির অগণতান্ত্রিক চরিত্র, কীভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে বিজেপি। আপনি ও শাহরুখ দু’জনেই বিজেপির শিকার। সবাইকে একসঙ্গে হতে হবে। বিজেপিকে বোল্ড আউট করতে হবে। রাজনৈতিক দল নিজেদের কাজ করবে, কিন্তু আপনারা সমাজের ভিত্তি। গণতন্ত্র কে বাঁচাতে পারলেই সমাজ এগোবে। কংগ্রেস লড়াই করছে না বিজেপি এর সঙ্গে। তাই আমাদের লড়াই করতে হবে।’
মুম্বই মাদক মামলায় গ্রেফতারের পর একাধিক শর্তে বম্বে হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান । গত ২৮ অক্টোবরই বম্বে হাইকোর্টে জামিন পেয়েছিলেন আরিয়ান। কিন্তু বাড়ি ফিরতে পারেন তার ২ দিন পর। আরিয়ানের কাছে কোনও মাদক না মেলায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা যায় না। সেই সময় নিজের কাজ থেকেও একেবারে বিরতি নিয়েছিলেন শাহরুখ। আরিয়ান মামলা চলাকালীন অনেকেই দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা এনসিবি প্রধাণত শাহরুখের ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই মিথ্যে মামলা সাজিয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে। তাঁর কাছ থেকে কোনও মাদক উদ্ধার না হলেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও শাহরুখের প্রিয় ‘দিদি’ মমতার প্রসঙ্গও উঠেছিল। মমতা-ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্যই শাহরুখের ছেলের এই পরিণতি বলেও দাবি করেছিলেন অনেকে।
ছেলে বাড়ি ফেরার পর জন্মদিনেও কোনও বিশেষ পোস্ট বা ছবি পাওয়া যায়নি অভিনেতার। এমনকী মিডিয়ার সামনেও বহুদিন দেখা নেই শাহরুখের। এই পরিস্থিতিতে মুম্বই সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই আশা করেছিলেন, শাহরুখের সঙ্গে দেখা করতে পারেন মমতা। যদিও শাহরুখের সঙ্গে মমতা দেখা করবেন না বলেই জানা গিয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধান বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে তৃণমূল। তবে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে এখনই ভাবতে রাজি নন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুম্বইয়ে নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠকে বুধবার তিনি বলেছেন, ‘কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিজেপিকে সরিয়ে গণতন্ত্রকে রক্ষা করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত আমাদের।’