কোনও আলোচনা ছাড়াই সোমবার বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাস করিয়ে নিয়েছে মোদী সরকার। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বিতর্কিত ওই তিন কৃষি আইন বাতিলের পক্ষে বিল পেশ করেন। সেই বিলকে কেন্দ্র করে সংসদে চলে ব্যাপক হট্টগোল। কিন্তু সেই হট্টগোলের মধ্যে জানা যায় ধ্বনি ভোটে কৃষি আইন বাতিলের বিল পাস হয়ে গিয়েছে। তার কিছুক্ষণ পরে রাজ্যসভাতেও ঠিক একই ভাবে এই বিল পাস হয়ে যায়। ঝড়ের গতিতে এইভাবে বিল পাস করাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাহুল গান্ধি, জয়া বচ্চন-সহ একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব কড়া ভাষায় এই ঘটনার নিন্দা করেছেন।
রাহুলের দাবি, কেন্দ্রের পাস করা এই কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল কৃষক এবং দেশের মানুষে ‘সাফল্য’। কিন্তু তিনি এই প্রশ্ন তোলেন যে কীভাবে বিরোধী দলের মতামত ছাড়াই মাত্র ৬ মিনিটের মধ্যে লোকসভায় একটি বিল পাস হয়ে যায়? সরকার আসলে কৃষি বিলের পিছনের সত্যিটা আড়াল করতে চায় এমন দাবি করে রাহুল বলেন, ‘আমরা ফসলের সহায়ক মূল্য বিল নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম লখিমপুরের খেরির ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে। পাশাপাশি গত এক বছরে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে যে ৭০০ জন কৃষক নিজের প্রাণ দিয়েছেন আমরা তাঁদের সম্পর্কেও আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে সরকার আমাদের সেই সুযোগ দেয়নি।’
এর পাশাপাশি এদিনও কৃষি আইন প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দেগেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রীর মন পরিবর্তন করতে ৭০০ জন কৃষককে নিজের প্রাণ দিতে হয়েছে। কেন্দ্র শেষমেষ কৃষক সম্প্রদায় তথা ভারতীয় জনগণের শক্তির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিল।’ অন্যদিকে, কেন্দ্রের তড়িঘড়ি বিল পাস করার তীব্র নিন্দা করেছেন সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ জয়া বচ্চনও। তিনি বলেন, ‘রাজ্যসভায় এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিল পাস করা হল কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই। আমি বহু বছর ধরে সাংসদের ভূমিকা পালন করছি। কিন্তু প্রথমবার এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হলাম যেখানে বিরোধী দল যখন কোনও বক্তব্য রাখছে তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁকে মাঝপথে থামিয়ে দিচ্ছেন এবং তাঁদের মতামত পেস করার কোনও সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। তার পরেও একটি বিল পাস হয়ে যাচ্ছে।’