ক’দিন আগেই উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের প্রচার করতে গিয়ে কলকাতার মা উড়ালপুলের ছবি ব্যবহার করেছিল যোগী সরকার। একই ঘটনা ঘটেছিল অণ্ডাল বিমানবন্দর নিয়েও। দেশজুড়ে বয়ে গিয়েছিল নিন্দার ঝড়। এবার ফের একবার মুখ পুড়ল বিজেপির প্রধানমন্ত্রী মোদীর গুণগান করতে গিয়ে ফাঁপরে পড়লেন। একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বাদ গেলেন না উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সভাপতি ও উপমুখ্যমন্ত্রীও। উন্নয়নের প্রতীচ হিসেবে নির্মীয়মাণ নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্ভাব্য চেহারার ছবি পোস্ট করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা। দু’দিন আগে জেওয়ারের এই বিমানবন্দরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই বিমানবন্দরেরই সম্ভাব্য চেহারার ছবি পোস্ট করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, অন্নপূর্ণা দেবী, অর্জুনরাম মেঘওয়াল, প্রহ্লাদ প্যাটেল, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্রদেব সিং ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। কিন্তু ভুয়ো প্রচার ধরা পড়ে যায় শুক্রবার রাতে। নয়ডার নির্মীয়মাণ বিমানবন্দর হিসেবে তাঁরা যা চালাতে চাইলেন, তা আসলে বেজিংয়ের ডাক্সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছবি। আর তা ফাঁস করলেন চীনের সরকারি চ্যানেলের এক কর্মী।
এদিন চীনের গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কর্মী শেন শিওয়েই একটি টুইট করেন। তিনি লেখেন, “ধাপ্পা… ভারত সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের সাফল্য প্রমাণে বেজিংয়ের ডাক্সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছবি ব্যবহার করতে হল আধিকারিকদের! স্তম্ভিত।” ভুয়ো ছবি-সহ বিজেপি নেতা ওমন্ত্রীদের করা টুইটগুলিও একযোগে পোস্ট করেন শিওয়েই। সেই সঙ্গে আসল ছবিটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, “চীনের বেজিং ডাক্সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাই। এটি ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলারের মেগা প্রজেক্ট।” অথচ, বেজিংয়ের এই বিমানবন্দরের ছবিকেই নয়ডার নির্মীয়মাণ বিমানবন্দর বলে দাবি করেছিলেন অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর টুইট, “নয়ডায় এশিয়ার বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আনবে।” প্রায় একই দাবি করেন বিজেপির বাকি নেতা-মন্ত্রীরাও। শিওয়েইয়ের কটাক্ষ, “ভুয়ো খবরের মাধ্যমে ভারত সরকারের মিথ্যা প্রচারের মুখোশ খুলে গেল।” বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা বেজিংয়ের বিমানন্দরের যে ছবিটি ব্যবহার করেন, তা প্রথম ছাপা হয়েছিল লন্ডনের আর্কিটেকচার ম্যাগাজিন ডি জিন-এ। ২০১৫ সালে। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের পোস্ট করা ছবি যে ভুয়ো, তার প্রমাণ মিলছে নয়ডা বিমানবন্দরের সরকারি টুইটার হ্যান্ডলেও। সেখানে ২৪শে নভেম্বর একটি গ্রাফিক্যাল ডিজাইন প্রকাশ হয়। তার সঙ্গেও মিল নেই মোদীর মন্ত্রীদের পোস্ট করা ছবির। জনতা থেকে রাজনৈতিক মহল, দিনভর নেটমাধ্যমে কটাক্ষের ঝড় তুলেছে সবাই। ‘বেজিং জনতা পার্টি’ বলে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস।