ষমা চেয়ে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তাঁর এই ‘চমক’ সংস্কারমুখী মোদী সরকারের ভাবমূর্তিকে ধাক্কা দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পাশাপাশি তুলে দিল একাধিক প্রশ্নও। তবে কি এবার কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা (৩৭০ ধারা) ফিরিয়ে দেওয়ার পালা? আপাতত হিমঘরে থাকা নাগরিকত্ব সংশোধন আইনও কি পড়তে চলেছে বাতিলের তালিকায়? সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরেছিল বিজেপি। মসনদে ফিরে একের পর এক ‘সংস্কারমুখী’ পদক্ষেপ করেছিল তারা। কুরসিতে বসেই প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিল করেছিলেন। অবলুপ্ত হয়েছিল সংবিধানের ৩৭০ ও ১৫এ ধারা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কম বিরোধিতা হয়নি।
বিরোধীরা বলে, বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধ করতে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল কাশ্মীরের নেতা-নেত্রীদের। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ভূস্বর্গে ইন্টারনেট পরিষেবাও। কাশ্মীরের গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়নি, বিশ্বের দরবারে এটা প্রমাণ করতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি মোদী সরকারকে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা চলছে এখনও, কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় মোদী সরকার। আর কতদিন নিজেদের অবস্থানে অবিচল থাকতে পারবে বিজেপি সরকার, কৃষক আইন প্রত্যাহারে পরই উঠছে প্রশ্ন।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর আরও একটি বড় সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। আনা হয় সংশোধিক নাগরিকত্ব আইন। যেখানে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ থেকে আগত অমুসলিম শরনার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে নাগরিকত্ব পেতে সংখ্যালঘুদের একাধিক নথিপত্র দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকী, নাগরিকপঞ্জি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রের এই আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। এমনকী, হিংসা ছড়ায় রাজধানী দিল্লীতেও। রাস্তা আটকে দীর্ঘদিন আন্দোলন চলে। মামলা হয় শীর্ষ আদালতেও। সাঁড়াশি চাপে দু’টি সিদ্ধান্তকেই কার্যত হিমঘরে পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্র। এর পর থেকে কোভিড পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে আইন কার্যকরের দিনক্ষণ লাগাতার পিছিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।এবার কি সেগুলিও প্রত্যাহার করা হবে, ছড়াচ্ছে জল্পনা।