পুলিশের ভূমিকায় দেশের মানুষ কতটা সন্তুষ্ট? তা জানতেই সারা দেশে সমীক্ষা চালিয়েছিল বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন বা আইপিএফ৷ ‘স্মার্ট পুলিশিং সার্ভে ২০২১’ শীর্ষক এই সমীক্ষায়, ফের এগিয়ে বাংলা। উল্টো দিকে যোগীর পুলিশের আচরণে তিতিবিরক্ত উত্তরপ্রদেশের জনতা৷ মোদী-শাহরা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের সাফল্যের জয়গান গাইলেও আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে মোটেই খুশি নয় উত্তরপ্রদেশের জনতা। আগামী বছরেই বিধানসভা ভোট যোগী রাজ্যে। আর তার আগেই লখিমপুর খেরির তদন্ত নিয়ে শীর্ষ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তার আগে হাথরস, উন্নাওয়ের ধর্ষণের ঘটনাতেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে যোগী রাজ্যের পুলিশের ভূমিকা। সেক্ষেত্রে নতুন এই সমীক্ষা রিপোর্ট বিজেপি সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
‘ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন’র সমীক্ষা বলছে, স্মার্ট পুলিশ সূচকে উত্তরপ্রদেশের স্থান তলানিতে, শেষ স্থান অবশ্য রয়েছে বিহার, যেখানে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডিইউ ক্ষমতায়। যোগী রাজ্যের সংগৃহীত নম্বর ৫.৮১, আর প্রথম স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশের সংগ্রহ ৮.১১৷ বাংলার সংগ্রহ ৬.৬৬৷ রাজ্যের জনতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশের ব্যবহারের প্রশ্নে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ত্রিপুরার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের থেকে অনেক এগিয়ে বাংলা। সেখানে মমতার রাজ্যের প্রাপ্ত মান ৬.৬৯৷ এই শ্রেণিতে সব থেকে তলায় জম্মু-কাশ্মীরের স্থান৷ আবার পুলিশের সংবেদনশীলতার দিক থেকেও উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরার থেকে এগিয়ে বাংলা৷ এই ক্ষেত্রে বাংলার সংগৃহীত মান ৬.৯৩৷ রাজ্য পুলিশের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সূচক ৫.২৭, যেখানে বাংলার পুলিশ অনেক এগিয়ে, সূচক ৬.৩৩৷
এই সমীক্ষা রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই বিজেপিকে নিশানা করেছে বিরোধী শিবির৷ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের কথায়,’ দেশের শীর্ষ আদালত যেভাবে প্রতিদিন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সমালোচনা করছে এবং তাদের গাফিলতির কথা তুলে ধরছে, তার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাজুয্যপূর্ণ এই সমীক্ষা রিপোর্ট৷’ তাঁর মতে, হাথরস, বা লখিমপুর খেরির মতো ঘটনার পরেও বিজেপি শিবির যে ভাবে উত্তরপ্রদেশকে সেরা রাজ্য বলে দাবি করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল এই সমীক্ষা রিপোর্ট৷ এই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে সরব অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিও৷ ‘এই সমীক্ষা রিপোর্ট যোগী সরকারের সুশাসনের প্রতিচ্ছবি৷ সরকার যেভাবে চলছে, তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে এই রিপোর্টে৷’ যোগী সরকারকে নিশানা করে এমনই মন্তব্য করেছেন সপা-র মুখপাত্র ঘনশ্যাম তিওয়ারি।