আইসিসি যতই পাকিস্তানকে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দায়িত্ব দিক, ভারত সরকার সবুজ সঙ্কেত না দিলে ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড প্রতিবেশী দেশে যেতে পারবে না। সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ফলে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের ওয়াঘার ওই পাড়ে যাওয়া নিয়ে যেমন তীব্র অনিশ্চয়তা তৈরি হল, তেমনই দায়িত্ব পাওয়ার একদিনের মধ্যেই ঘোর সমস্যায় পাকিস্তান।
কারণ সেখানকার পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয়। এর আগে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। ফলে পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। তাই মুহূর্তে এই সফর নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। যখন সময় আসবে তখন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
কয়েক দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলার সময় এই বিষয় নিয়ে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন বোর্ড প্রধান বলেছিলেন, “ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে সরকারের উপর। এই ব্যাপারে আমার বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রামিজ রাজার হাতে কিছু নেই।”
২৫ বছর আগে ১৯৯৬ সালে পকিস্তানের মাটিতে শেষ বার বিশ্বকাপের আসর বসেছিল। ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পাকিস্তানও ছিল আয়োজক দেশ। ২০০৫-০৬ মরসুমে শেষবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের দেশে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছিল ভারত। এরপর ২০০৮ সালে সেই দেশে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেটাই ভারতীয় দলের শেষ পাক সফর। ২০১২-১৩ মরসুমে ভারতের মাটিতে শেষবার খেলতে এসেছিল পাকিস্তান। এরপর আর দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয়নি।
দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন লেগেই আছে। ভারতের তরফ থেকে সীমান্ত সন্ত্রাসের অভিযোগ চলছেই। এমন অবস্থায় ক্রিকেট সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই বিষয়ে অনেক বছর ধরেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। তবে অবস্থার উন্নতি হয়নি।
তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সঙ্গে বন্ধ রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। যদিও আইসিসি প্রতিযোগিতা ও এশিয়া কাপে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দেশ। এমন অবস্থায় ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাল করে খতিয়ে দেখার পরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
এই বিষয়ে অনুরাগ বলেন, “ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেও জানিয়েছে এই ধরনের বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে অনেক কিছু ভাবতে হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক না থাকার জন্য নিউজিল্যান্ড সেই দেশে যাওয়ার পরেও মাঠে নামতে চায় নি। কিউইদের দেখে ইংল্যান্ডও পাকিস্তান সফর বাতিল করেছিল।